ইবি লাইভ:: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রধান ফটকের সামনে খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কে নেই কোন গতিরোধক। বিশ্ববিদ্যালয়টির সামনে গতিরোধক না থাকাই যেকোন মুহুর্তে দূর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। মহাসড়কটি সংস্কারের ফলে পূর্বের গতিরোধক উঠিয়ে দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে মারাত্মক দূর্ঘটনার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন যাবত খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে ছিল। সড়কের যেখানে সেখানে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় নানা দূর্ঘটনার শিকার হতে হয়েছে যাত্রীদের।
এ সড়কটির বেহাল দশার চিত্র একাধিকবার বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হওয়ার পরে অবশেষে সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের রাস্তা সংস্কারে হাত দেয়। নতুন করে সংস্কার করা ঐ সড়কের উপর নতুন করে কার্পেটিং দেওয়ায় সড়কে যেসব গতিরোধক ছিল তা এখন আর নেই। আর এসব গতিরোধক না থাকার ফলে যেকোন মুহুর্তে মারাত্মক সব দূর্ঘটনার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ও কর্মরত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ সম্ভাবনা বেশি দেখা দিয়েছে।
কুষ্টিয়া হতে ২৪ কিলোমিটার এবং ঝিনাইদহ হতে ২২ কিলোমিটার অদূরে শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুর নামক স্থানে খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের পার্শ্বে বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান। দেশের উত্তর-দক্ষিণবঙ্গের ৩২ টি জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এ সড়কটি।
প্রতিদিন গড়ে ১১ হাজার বাস, মিনি বাস, মালবাহি ট্রাক, পিকআপ, টেম্পু যাতায়াত করে এ সড়ক দিয়ে। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার যাত্রী নিয়ে যাত্রীবাহি বাসগুলো দেশের দক্ষিণবঙ্গ হতে উত্তরবঙ্গে এবং আশে পাশের জেলাগুলোতে চলাচল করে।
দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর যশোরের বেনাপোল স্থল বন্দর এবং শিল্পাঞ্চল খুলনা হতে প্রতিদিন শতশত মালবাহী ট্রাক ঢাকার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায় এ সড়ক দিয়েই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনেই মহাসড়কের দু‘পাশে কোন গতিরোধক না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে মারাত্মক দূর্ঘটনার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
ফলে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ হতে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহি বাস ও মালবাহি ট্রাকগুলো কোন রকম গতিরোধ ছাড়ায় পুরো গতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক টপকিয়ে চলে যায়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থী ও কর্মরত প্রায় ১২০০ শত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পারাপার হয়। এতে করে যেকোন সময় ঘটে যেতে পারে অনাকাঙ্খিত ঘটনা।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মুনমুন বলেন, ‘আমাদের অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের ওপারে ফটোকপির দোকানে যাওয়া লাগে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আগের মতো কোন গতিরোধক না থাকাই খুব ভয় পাই রাস্তা পার হতে।’
ট্যুরিজম বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আঁখি বলেন, বর্তমানে রাস্তা ভালো থাকাই গাড়িগুলো জোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে চলে যায়। যদি আগের মতো সেই গতিরোধক থাকতো তবে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে নিম্নগতিতে যেতে হতো।
এদিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ইমানুল বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করায় অধিকাংশ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া বাজারে মহাসড়ক দিয়ে আসা-যাওয়া করি। কিন্তু এখন মহাসড়কে উঠতেই ভয় পাই’।
অথচ বাংলাদেশ নিরাপদ সড়ক নীতিমালা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে সাইন বোর্ড ও গতিরোধক থাকা আবশ্যক।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি চালক সালাহউদ্দিন বলেন,‘ আমরা গাড়ি চালাতে যেয়ে অনেকটা সমস্যার মধ্যে পড়ছি। কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে গাড়িগুলো তীব্র গতিতে চলাচলের কারনে যেকোন মুহুর্তে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হয়ে যেতে পারে। গতিরোধকের ব্যাপারে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি চালকেরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে যথাযত কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করবো। যেন তারা শিক্ষার্থীদের স্বার্থে অতিসত্তর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের মহাসড়কে গতিরোধকের ব্যবস্থা করে।’
ঢাকা, ১৭ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: