Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ৬ই মে ২০২৪, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

যে শিক্ষক ছাত্রদের দিয়ে খেতের ধান কাটান!

প্রকাশিত: ১৭ মে ২০১৮, ০৩:১৬

রাজশাহী লাইভ: তিনি ছাত্রদের দিয়ে খেতের ধান কাটান। এতে ছাত্রদের দু'বেলা পেট ভরে খাওয়ালেই চলে। কোন মজুরী দিতে হয়না। কখনও তিনি কোচিং পড়িয়ে পুষিয়ে দেন। এমন ঘটনা এখন গোটা রাজশাহী জুড়ে রটিয়েছে। অভিবাবকরা এনিয়ে ক্রমেই ক্ষোভ জানিয়েছেন। এই অভিযোগ জেলার বাগমারা উপজেলার বানইল উচ্চবিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তিনি ছাত্রদের দিয়ে নিজের খেতের ধান কাটানোর কাজ করে চলেছেন।

বলা হচ্ছে, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের পরিবর্তে দশম শ্রেণির ছাত্রদের ধান কাটতে বাধ্য করেছেন ওই শিক্ষক। ওই শিক্ষক দাবি করেছেন, শ্রমিক না পাওয়ায় ছাত্রদের দিয়ে ধান কাটিয়েছেন তিনি। এর জন্য ছাত্রদের মজুরি দেওয়া হবে।

এই ঘটনায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ওই শিক্ষককে তলব করেছেন। এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা ওই শিক্ষকের শাস্তিও চেয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্র অভিভাবক ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, গত মঙ্গলবার সকালে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসে। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মহসিন আলী দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ডেকে নেন।

এ সময় তিনি বেছে ১০-১২ জন শিক্ষার্থীকে তাঁর জমিতে ধান কাটার প্রস্তাব দেন। শিক্ষার্থীরা আপত্তি না করলে তাদের ধান কাটার জন্য উপজেলার জিয়াপাড়ায় তাঁর বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরে তাঁদের জন্য ধান কাটার কাস্তে ও তা বহনের জন্য বাঁক দিয়ে ধান খেতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ছাত্ররা এ সময় ধান কেটে তা বহন করে শিক্ষকের বাড়িতে পৌঁছে দেয়।

এই ঘটনাটি জানার পর স্থানীয় লোকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন। পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন ইউএনও।

বাগমারার ইউএনও জাকিউল ইসলাম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। পাঠদানের পরিবর্তে ছাত্রদের দিয়ে শিক্ষকের খেতের কাজ করিয়ে নেওয়া ঠিক না।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মীর মস্তাফিজুর রহমান ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, তিনি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। এ জন্য প্রধান শিক্ষক এবং ওই শিক্ষককে তাঁর দপ্তরে তলব করা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৫/৬জন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, লেখাপড়ার জন্য সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়েছেন। পাঠদানের পরিবর্তে তাদের দিয়ে ধান কাটার কাজ করে নিচ্ছেন। এর বিচার হওয়া উচিত। কেন তিনি এমনটি করবেন।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেওয়া হলে অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক বাধ্য করার কারণে অনেক শিক্ষার্থী মজুরি খেটে টাকা জোগাড় করছে।

এ জন্য তারা ধান কাটছে বলে জানিয়েছে। বিদ্যালয় চলাকালীন ছাত্রদের পাঠদান না করিয়ে ধান কাটতে বাধ্য করা ঠিক হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
ধান কেটেছিল এমন তিনজন ছাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা গেলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে চায়নি।

শিক্ষক মহসিন আলী অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, এলাকায় শ্রমিক-সংকটের কারণে দশম শ্রেণির ছয়জন ছাত্রকে দিয়ে নিজের খেতের প্রায় এক বিঘা বোরো খেতের ধান কেটে নিয়েছেন। অভিযোগ আসার পর শিক্ষার্থীদের খেত থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ধান কাটা ওই সব ছাত্রের মজুরি দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। আর কিছু বলতে রাজি হননি।


ঢাকা, ১৬ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিসিএস


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ