ইবি লাইভ: শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে ঢাবির সাবেক আআমস আরেফিন সিদ্দিকীসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও শিক্ষকরা একাত্মতা ঘোষনা করেছে। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বা প্রক্টরকে বাধা দিতে দেখা যায়নি।
তবে আন্দোলনকারীদের ছবি তোলা ও ভিডিও ধারণ করে তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে ইসলমী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান। এতে তিনি দেশব্যাপী ধিক্কার আর সমালোচনার মুখে পড়েছেন। গতকাল বুধবার ইবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচিতে গিয়ে ছবি তোলেন এবং ভিডিও ফুটেজ ধারণ করেন।
এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধাকমিও দেন। এর আগে গত ১১ এপ্রিলও তিনি খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করা ইবি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলার ছলে লুকিয়ে লুকিয়ে ছবি তোলেন। তবে তার মোবাইল ক্যামেরার ফ্লাশ চালু থাকায় শিক্ষার্থীদের কাছে তা ধরা পড়ে। এনিয়েও দেশব্যাপী সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। তার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, তেল চুরি, বিগত প্রশাসনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
প্রজ্ঞাপন প্রকাশের দাবিতে বুধবার সারা দেশের সাথে মানবন্ধন করে ইবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিবের পাদদেশে ব্যানার নিয়ে মানবন্ধন শুরু করলে সেখানে উপস্থিত হন প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান।
তিনি উপস্থিত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন হুমকি দিয়ে ছবি তুলতে এবং ভিডিও করতে শুরু করেন। পরে তার ছবি তোলা এবং ভিডিও করার ছবি কোটা আন্দোলনের কেন্দ্রীয় ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট হওয়ার সাথে সাথে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড়[ শুরু হয়। দেশের ছাত্রসমাজ তাকে ঘৃণা ভরে ধিক্কার জানায় এবং তার এমন নির্লজ্জ কাজকে প্রত্যাখান করে।
পাঠক মহলের জ্ঞাতার্থে ফেসবুক গ্রুপ থেকে কিছু পাঠকের মন্তব্য হুবুহু তুলে ধরা হল। তাহের মন্ডল নামে ইবির সাবেক একজন শিক্ষার্থী মন্তব্য করেন, ‘ইবির প্রাক্তন ছাত্র হিসাবে লজ্জা বোধ করছি। উনি নাকি ইবির সেরা প্রক্টর?
কিছু কিছু পা চাটা শিক্ষক আর ছাত্র উনাকে সেরা প্রক্টর বানিয়েছে। উনার রেজাল্ট যাচাই করা দরকার। উনি শিক্ষক নিয়োগ কি মেধার দ্বারা পেয়েছেন নাকি কোটায় নিয়োগ পেয়েছেন?’ তাহসিনুল ইসলাম মন্তব্য করেছেন, ‘শিক্ষককে গালি দেওয়া যায় না। কিন্তু গালি দেয়ার দরকার ছিল।’
নীড় হারা পাখি নামক একটি ফেসবুক আইডি থেকে মন্তব্য করেন, ‘আগে রাবিতে থাকতে শিবির, বিএনপির আমলে ইবিতে শিক্ষক হইছে। ক্যাম্পাসে গাড়ি চালাইয়া তেল চুরি করেছে। শিক্ষক নিয়োগের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ খাইছে।’
প্রক্টরের বিভাগের সাবেক একজন শিক্ষার্থী গ্রæপে প্রক্টরের ছবিতে মন্তব্য করেছেন, ‘স্যার আমার ডিপার্টমেন্টের, আমি বুঝি না স্যার এসব করে কোন স্বার্থে নিজের ইমেজখানা নষ্ট করতেছে?’ জাহীর খান নামে একজন পাঠক লেখেছেন, ‘কী নির্লজ্জ !!! ছি ছি !! টিচাররা এই রকম পা চাটা গোলাম হয় ভাবতেও অবাক লাগে!!’
মাহিদুল হাসান লেখেছেন, ‘মূল্যবোধ না থাকলে যা হয় আর কি! এরা আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক!’। মাহফুজুর রহমান নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘এ কেমন প্রক্টর? ছাত্রছাত্রীদের যৌক্তিক শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে বাধা প্রদান করে! ইনি আসলে প্রক্টর নামের কলঙ্ক।’ রাহাত নামে একজন লেখেন, ‘আমি দালাল দেখিনি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক (ইবি প্রক্টর) দেখেছি।’
আহমেদ শাকিল নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘এইসব আধা পাগলগুলোর জন্য দেশের আজকে এই অবস্থা।’ রাসেল মীয়া লেখেন, ‘দালালীর মাধ্যমে প্রক্টর হইছে তাই প্রতিদান দেওয়ার জন্য পিক তুলছে।’ আশিকুর রহমান মন্তব্য করেন, ‘ছাত্র পড়ালেই শিক্ষক হওয়া যায় না!!! পরিমালরাও কিন্তু শিক্ষক ছিল। তাই এদেরকে নিয়ে ভাবার কোন কারণ নাই। ছাগলের ৩ নম্বর বাচ্চা।’, মহসিন সরকার লেখেন, ‘এরা টিচার নামের কলঙ্ক, বাংলার ছাত্র-ছাত্রীরা ভয় পায় না।’
সজিব সরকার মন্তব্য করেন, ‘এইসব ফুটোগ্রাফার থাকতে আমাদের চলচ্চিত্রে ক্যামেরাম্যান পাওয়া যাচ্ছে না।’ মেহেদী হাসান নামে একজন লেখেছেন, ‘এই শিক্ষকের একটু ছোটখাটো জীবন বৃত্তান্ত দেন। কেন সে বার বার এমন হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, বুঝতে পারছি না। এরা কি অযোগ্য টিচার নাকি কোটাধারী টিচার? আমরা একটু জানতে চাই। যেখানে সব শিক্ষকেরা একাত্মতা প্রকাশ করছেন, সেখানে উনি কেন বার বার বাধা দেন?!’
বেলাল হোসেন সুভ নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘একজন সৎ বিবেকবান ভাল মানুষই পারে তার জাতির উন্নতি কামনায় সকলের পাসে দাড়াতে। কিছু কুলাঙ্গার এর বিরোধীতা করবে এটাই স্বাভাবিক। তাতে বীর কখনো পিছ পা হয় না। সেলুট স্যার।’ সাদিকুর রহমান নামে একজন মন্তব্য করেন, ‘যারা ১৯৭১ সালে রাজাকার দেখেন নাই তাদের জন্য ২০১৮ সালের রাজাকার দেখার সুযোগ!!!’
ঢাকা, ১০ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: