জবি লাইভ: আসছে বাংলা নতুন বছর। বাংলা সনের প্রথম দিনটিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। শোভাযাত্রায় একটু ভিন্ন রকম সাজে সাজবে বলে জানান আয়োজকরা। বিশাল আকারের জাতীয় ফল কাঁঠাল দিয়ে সাজানো হবে পয়লা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রার থিম।
১৪২৪ বঙ্গাব্দকে বিদায় জানিয়ে ১৪২৫-কে স্বাগত জানাতে এবারের নববর্ষকে তুলে ধরা হবে মঙ্গল শোভাযাত্রার জাতীয় ফল কাঠালের ‘একা একা নয় বরং সবার সাথে শেয়ার করে খাওয়ার শিক্ষাকে।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি প্রফেসর ড. মীজানুর রহমান এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার থিমের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ধরনের থিম ঠিক করার কারণ জানতে চাইলে ভিসি বলেন, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ফল হওয়ায় এটি কখনোই এককভাবে খাওয়া যায় না।
যখনই কেউ কাঁঠাল খায় তখন বন্ধু, বান্ধব, পরিবার ও আশপাশের সবাইকে নিয়েই খাই। এই যে একা একা ভোগ করার প্রবণতা এটা থেকে বেরিয়ে আসার শিক্ষা দেয় কাঁঠাল। অন্য যে কোনো ফল একা খাওয়া যায় কিন্তু কাঁঠাল কেউ একা কিংবা লুকিয়েও খাইতে পারে না। কিন্তু একটি কাঁঠাল খাইতে হলে বরং অনেককে সাথে নিয়ে খাইতে হবে। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের সীমিত সম্পদ সবাই মিলে ভোগ করার শিক্ষা পাই।
ফলে কাঁঠাল আমাদের সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণের শিক্ষা দিয়ে থাকে। এই সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণের মাধ্যমে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। এছাড়া আমাদের জাতীয় পাখির নামে দোয়েল চত্ত্বর, জাতীয় ফুলের নামে শাপলা চত্ত্বর থাকলেও জাতীয় ফলের নামে কাঁঠাল চত্ত্বর নেই। যার কোনো কিছু ফেলনা নয়। তাই এবারে আমাদের মঙ্গল শোভাযাত্রার থিম হবে ‘কাঁঠালের শিক্ষা।’
মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা করার পর দ্বিতীয় বার পালিত হচ্ছে তাই এবার কোনো বিশেষত্ব থাকবে কি না জানতে চাইলে জবি ভিসি বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর চেষ্টা করি একটু অন্যরকম আয়োজন করার। পুরোনো ঢাকার প্রায় ৩০০ শতাধিক শিক্ষা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এতে অংশগ্রহণ করবে। তবে এতে এবার বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্লেকার্ড থাকবে। সর্বোপরি আয়োজনের দিক থেকে এবার সবচেয়ে ব্যাপকভাবে করা হবে।’
জানা যায়, ১৯৮৯ সালে সামরিক স্বৈরশাসনের হতাশার দিনগুলোতে তরুণেরা এটা শুরু করেছিল। শিক্ষার্থীরা অমঙ্গলকে দূর করার জন্য বাঙালির নানা ধরনের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক, প্রাণীর প্রতিকৃতি ও মুখোশ নিয়ে শোভাযাত্রা করেছিল।
মঙ্গল শোভাযাত্রাকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার যে কয়েকটি কারণ ইউনেস্কো উল্লেখ করেছে তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে, এ শোভাযাত্রা অশুভকে দূর করা, সত্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির প্রতীক। এই শোভাযাত্রার মাধ্যমে বাঙালির ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, জাতিগত সব ধরনের বৈশিষ্ট্য এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মের কাছে হস্তান্তরিত হয়।
ঢাকা, ৩১ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: