ঢাবি লাইভ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) দ্বিতীয়বারের মত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের (ডিইউসিএস) আয়োজনে বৃহস্পতিবার (১৫ই চৈত্র, ১৪২৪) অনুষ্ঠিত হচ্ছে জুঁই নিবেদিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বসন্ত উৎসব ১৪২৪। এই আয়োজনের সহযোগিতায় রয়েছে স্কয়ার ফুড এন্ড বেভারেজ লিমিটেড, কুল, কিশোরআলো ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন।
বাংলা ১৪২৪ সনের প্রায় বিদায়ক্ষণে বসন্তকে ভিন্ন আঙ্গীকে উদযাপন করার প্রয়াসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের অন্যতম বৃহৎ সাংস্কৃতিক আয়োজন এই বসন্ত উৎসব চলবে দিনব্যাপী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও দেশ-বিদেশের সবার জন্য উন্মুক্ত এ উৎসব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষক কেন্দ্র, টিএসসি প্রাঙ্গণে সকাল ১০টায় থেকে শুরু হয়েছে এ উৎসব এবং চলবে রাত ৯ টায় পর্যন্ত। উৎসবের সকালের আয়োজনের উদ্বোধন করেন প্রফেসর ড. নাস্রিন আহমাদ, প্রো-ভিসি (শিক্ষা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
উদ্বোধন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টিএসসি প্রাঙ্গন থেকে বসন্ত উৎসবের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে। এছাড়াও দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও কনসার্টের মাধ্যমে এ উৎসব উদযাপন করা হচ্ছে। দুপুর ৩টায় সাংস্কৃতিক পর্বের উদ্বোধন করবেন তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) প্রফেসর নাস্রিন আহমাদ বলেন, “বসন্ত হচ্ছে জীবনের প্রতীক তাই বসন্তকে ঋতুরাজ বলা হয়। বাঙ্গালী সংস্কৃতির অন্যতম প্রাণের উৎসব, বসন্ত উৎসব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতেও উৎসবের এই ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আহবান জানান।
বিশেষ অতিথি বিশিষ্ট কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড: সৌমিত্র শেখর ডিইউসিএসকে বসন্ত উৎসব আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “যে জাতির জীবনে উৎসব-অনুষ্ঠান থাকে না, সে জাতি মৃতপ্রায়, সে জাতি এগিয়ে যাবার পথ পায় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বার বার বাঙ্গালীর জাতীয় জীবনের বিভিন্ন অবস্থা তুলে ধরে। বসন্ত উৎসব তারই একটি দৃষ্টান্ত।"
অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের মডারেটর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সাবরিনা সুলতানা চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি ও বসন্ত উৎসবের আহ্বায়ক আহসান রনি এবং সাংস্কৃতিক সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাহাবার আলম। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয় নাট্য ব্যক্তিত্ব অনন্ত হীরা, নূনা আফরোজ ও রাহুল আনন্দকে।
সম্পূর্ণ উৎসবকে দুইটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্বে ছিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও বসন্ত উৎসব এর বিশেষ র্যালী এবং দ্বিতীয় পর্বে ডিইউসিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজন।
যার মধ্যে থাকবে পুঁথিপাঠ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্ম নিয়ে বিশেষ গীতিনাট্য পরিবেশনা, কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টিকর্ম নিয়ে বিশেষ নৃত্যনাট্য পরিবেশনা, নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের জীবন নিয়ে পরিবেশনা ‘নানা রঙয়ের বাংলাদেশ’, পাহাড়ি নৃত্য, লাঠিনৃত্য, পুতুল নাচ ও নাট্যদল ‘বঙ্গলোক’ এর পরিবেশনা।
উৎসবের শেষভাগে থাকবে জনপ্রিয় ব্যান্ড দল “জলের গান” ও “গানকবি”-র বিশেষ সঙ্গীত পরিবেশনা। সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পাশাপাশি বসন্ত উৎসবে আগত দর্শকদের মনোরঞ্জণের জন্য উৎসব প্রাঙ্গণে গ্রামীণ মেলার আয়োজন রয়েছে। নাগরদোলা, পুতুল নাচ, বায়োস্কোপ, বানর নাচ, মোরগ লড়াই, বেলুন শ্যুট সহ নানা ধরনের বাঙ্গালী খাবার ও লোকজ হস্ত ও মৃৎশিল্পের পসরা বসেছে এ মেলায়। অনুষ্ঠানটি সকলের জন্য উন্মুক্ত।
ঢাকা, ২৯ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: