Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | মঙ্গলবার, ৭ই মে ২০২৪, ২৪শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

আইডিয়ালের শিক্ষকের কাণ্ড: রড দিয়ে পেটালেন ৯ শিক্ষার্থীকে

প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০১৮, ০৪:২১

লাইভ প্রতিবেদক: একি করলেন শিক্ষক। একজন নয়, দুইজন নয় ৯ জন শিক্ষার্থীকে রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করলেন। এনিয়ে চলছে তোলপাড়। হৈচৈ পড়েছে কলেজ ক্যাম্পাসসহ বিভিন্ন মহলে।

এক বন্ধুর জন্মদিন পালন করায় রাজধানীর ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের ৯ শিক্ষার্থীকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে কলেজ হোস্টেলের শিক্ষক মনিরুল ইসলাম সোহেলের বিরুদ্ধে। গত ২৬ মার্চ রাত ১২টার পর কলেজ ছাত্রদের একটি হোস্টেলে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা সবাই এ বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থী ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আহত এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা ৯-১০ জন বন্ধু মিলে ২৬ তারিখ রাত ১২টার সময় হোস্টেলের নিচে এক বন্ধুর জন্মদিন পালন করছিলাম। জন্মদিন পালন করতে গেলে একটু হই-হুল্লোড় তো হয়ই। সেটাই হয়েছিল। এমন সময় সোহেল স্যার হঠাৎ এসে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। পরে তিনি আমাদের সিরিয়ালি দাঁড় করিয়ে রড দিয়ে পেটান। আর এ ঘটনার ভিডিও করেন স্যারের সহযোগী আনোয়ার মোল্লা।

ভুক্তভুগীর ফেসবুকে স্ট্যাটাস

তিনি আরো বলেন, এমন ঘটনা তিনি (মনিরুল ইসলাম সোহেল) প্রায়ই ঘটান। আমাদের এভাবে অযথাই মারধর করেন। কিন্তু এবার অতিরিক্ত করেছেন। এক বন্ধুর হাত কেটে গেছে, অঝোরে রক্ত ঝরেছে। কয়েকজনের হাতে পায়ে রড দিয়ে মারার কারণে কালো দাগ হয়ে গেছে। নখ দিয়ে আচড় দেওয়ায় মুখের কাছে,কানের কাছে কেটে গেছে।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মনিরুল ইসলাম সোহেল কলেজটির পৌরনীতি ও সুশাসন বিষয়ের শিক্ষক। তিনি কলেজটির অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন আহমদের ভাতিজা। তিনি ছাত্র হোস্টেলের দায়িত্বে রয়েছেন।

এব্যাপারে জুবায়ের হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমাদের পরিচয়, আমরা আইডিয়াল কলেজ জেলখানার আসামি। আমাদের জীবনে সবচেয়ে বড় ভুল আমরা কলেজ হোস্টেলে থাকি। আমাদের এভাবে মেরে রক্তাক্ত করার পেছনে কারণ হচ্ছে একজনের বার্থডেসেলিব্রেশন করা। সোহেল স্যার কাজটা আপনি ঠিক করেন নাই। আমরা তো জাস্ট বার্থডে সেলিব্রেশন করছিলাম। এটা প্রথমবার না, এর আগেও অনেকবার এই রকম ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এবারেরটা মাত্রাতিরিক্ত হইছে।

এই কর্মে সোহেল স্যারের সহযোগী আনোয়ার মোল্লা। যিনি স্যারকে বাধা না দিয়ে আরও উৎসাহ দেন এবং তিনি মোবাইলে ভিডিও করেন। স্যার আমাদের আরও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। আমাদের এই অবস্থা করার পর আবার আমাদের দিয়ে রুম, বারান্দা, রুমের সামনে ফাঁকা অংশ পরিষ্কার করিয়ে নেন। আমাদের যখন শরীর থেকে রক্ত ঝরছিল তখন আমরা স্যারকে কোনও ব্যবস্থা নিতে বললে তিনি আমাদের সাহায্য করার বদলে আবার মারধর শুরু করেন। এখন আপনারাই বলুন এটা কেমন শিক্ষক আর কেমনই বা হোস্টেল?’

এ বিষয়ে জানতে মনিরুল ইসলাম সোহেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

কলেজটির অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন আহমদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যেদিন স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হলো এটা সেদিন রাতের ঘটনা। বাচ্চারা এমন জন্মদিন পালন করে প্রায়ই। কিন্তু সমস্যা হলো তারা মাঝে মাঝে একটু বেশি বাঁদরামি করে। ওইদিন একটু বেশি করছিল। ডিম ও আটা-ময়দা ছুড়াছুড়ি করছিল। এজন্য সোহেল তাদের একটু চড়-থাপ্পড় দিয়েছে। তারপর অবশ্য আমি ছাত্রদের ডেকে শিক্ষকের সঙ্গে মিলমিশ করিয়ে দিয়েছি।

জন্মদিনে আঁটা ময়দা মেখে ছোড়াছুড়ির শিকার

তবে কোনও ‘মিলমিশ’ হয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, আমরা বিচার চাই। এক শিক্ষার্থী বলে, এ ঘটনার আগের দিনই আমাদের সংবর্ধনা দিয়ে বিদায় দিয়েছে। কারণ আমরা এইচএসসি পরীক্ষার্থী। বিদায় অনুষ্ঠানে প্রিন্সিপাল বলেছেন, আমরা তাদের সন্তানের মতো। অনেক ভালোবাসেন আমাদের।

এই তাদের ভালোবাসার নমুনা? প্রিন্সিপাল স্যার বলতে পারবেন, তার নিজের সন্তানকে এভাবে তিনি মেরেছেন? অথবা অন্য কেউ তার সন্তানকে এভাবে মারার পরও সহ্য করেছেন? আমরা এর বিচার চাই।

 

ঢাকা, ২৮ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ