Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বুধবার, ১৫ই মে ২০২৪, ১লা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

স্কুলছাত্রীকে নিয়ে শিক্ষকের রাজনীতি: স্কুলে আসতে নিষেধ

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০১৮, ২২:৩২

লাইভ প্রতিবেদক: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী তিথি। স্যারদের প্রতি তার একান্ত ভালবাসা আর ভক্তির বিন্দু মাত্র অভাব নেই। কিন্তু কেন যে, এক অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি তার দিকে তেড়ে আসছে সে প্রশ্নের উত্তর সে নিজেও জানে না। সমাজের সকল পেশাজীবি মানুষের ছেলে মেয়েদের শিক্ষার প্রধান স্থান প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর এখান থেকেই যদি ছিটকে পড়ে যায় তাহলে তো শিক্ষা সেতো নাগালের বাইরেই থেকে যাবে।

অসুস্থ ওই শিক্ষার্থী তিথিকে দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার করান শিক্ষক। কিন্তু তাতে কি এমন হয়েছে? তাদেও তিথির কোন ব্যাথা নেই। দু:খ ওখানেই সবাই যদি বিদ্যালয়ের সকল সুযোগ সুবিধা পেয়ে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে তবে আমি কেন পারব না? স্যারে নির্দেশে তিথি তার দায়িত্ব বাথরুম পরিষ্কার করেছে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পেরে বিদ্যালয়সহ গোটা এলাকায়।

সাধারণ শিক্ষার্থীসহ সহপাঠিরাও তার সাথে কথা বলতে ভয় পাচ্ছে। কারণ! সহকারী প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে ক্লাসের কোন শিক্ষার্থী তিথির সাথে কথা বলতে নিষেধ করে দিয়েছেন। ঘটনা এখানেই শেষ নেই, গত বুধবার তিথিকে ডেকে স্কুলে আসতেও নিষেধ করে দেয়া হয়। পরে কাঁদতে কাঁদতে তিথি স্কুল ছেড়ে বাড়ি চলে যায়।

আলমডাঙ্গার ঘোষবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অসুস্থ ছাত্রী তিথিকে দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার করার ঘটনায় ক্লাসে ওই ছাত্রীকে এখন একঘরে করে রাখা হয়েছে। সহকারী প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে ক্লাসের কোন শিক্ষার্থী তিথির সাথে কথা বলতে সাহস করছে না।

জানা গেছে, ৫ম শ্রেণির ছাত্রী তিথি এ্যাসেমব্লিতে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সে ছুটি নিয়ে বাড়ি আসতে চাইলে সহকারী প্রধান শিক্ষক ডাবলু রহমান পালানুযায়ী তিথিকে বাথরুম পরিষ্কার করে বাড়ি যেতে বলেন। তিথি স্যারকে জানায়, সে অসুস্থ। তারপরও ডাবলু রহমান জোরপূর্বক তিথিকে দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার করিয়ে নেন। এতে ছাত্রীটি আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে তিথির বাবা মন্টু সাহা এর প্রতিবাদ করতে স্কুলে এলে প্রধান শিক্ষক সাদ আহমেদ ও সহকারী প্রধান শিক্ষক ডাবলু রহমান তার প্রতি মারমুখো হয়ে ওঠেন। এ সময় হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।

মঙ্গলবার এ ঘটনার পর বুধবার তিথি যথারীতি স্কুলে যায়। গিয়ে দেখতে পায় ভিন্ন রকম পরিবেশ। ক্লাসের কেউ তার সাথে কথা বলছে না। তারা তিথিকে জানায়, ডাবলু স্যার তিথির সাথে কথা বলতে নিষেধ করে দিয়েছেন। যে কথা বলবে তার পরিস্থিতিও তিথির মতো হবে এরকম হুমকি দিয়েছেন তিনি। এ সময় ক্লাস থেকে তিথিকে ডেকে সহকারী প্রধান শিক্ষক ডাবলু রহমানের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি তিথিকে স্কুলে আসতে নিষেধ করে দেন। এই অকল্পনীয় অপমানজনক পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে তিথি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে যায়।

তিথির বাবা জামজামী গ্রামের মন্টু সাহা বলেন, সামনে মেয়ের পিইসি পরীক্ষা। ডাবলু মাস্টার সরাসরি তিথিকে স্কুলে যেতে নিষেধ করে দিয়েছেন। স্কুলে গেলেও তাকে কোনকিছু পড়ানো হচ্ছে না। ক্লাসের মেয়েদের তিথির সাথে কথা বলতে নিষেধ করে দিয়েছে ডাবলু মাস্টার। এই পরিস্থিতিতে তিথিও লজ্জা আর অপমানে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি আরো জানান, অত্যন্ত প্রভাবশালী সহকারী প্রধান শিক্ষকের বাড়ি স্কুলের পাশে ঘোষবিলা গ্রামে।

বিদ্যালয়ের সভাপতি সাহানুর ইসলাম জানান, ঘটনা শুনেছি। শিক্ষক যা করেছেন তা করতে পারেন না। শনিবার আমি এর ব্যবস্থা নিব। উপজেলা শিক্ষা অফিসার মৃনাল কান্তি সরকার জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

ঢাকা, ২৩ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ