জাককানইবি লাইভ: ধবধবে সাদা টি-শার্ট। চারিদিকে রঙের ছোড়াছোড়ি, দেখে মনে হচ্ছে যেন হলি খেলছে। রঙ-বেরঙ পরিচিত মুখগুলো। কাছের মানুষ গুলোর লেখায় যেন ভরে গেছে সাদা টি-শার্ট গুলো। মনে হয় আজ যেন লেখালেখির লগ্ন এসেছে।
কেউ লেখে যেখানে থাকিস ভাল থাকিস, আবার কেউ লেখে তোকে অনেক মিস করব, কেউ একজন লিখেছে, 'তোর জন্য একটা ছেলে আজও ভীষণ একা'। বিদায় বেলা সেটা দেখে একা থাকার আর কি উপায় আছে! এই হচ্ছে র্যাগ-ডে।
বান্ধবী কানে কানে একটি কথা বলব...একটু এদিকে আয়, আয় না! কোন কথা নয় বরং কাছে আসার সঙ্গে সঙ্গে বান্ধবীকে আবীরের ছটায় রঙিন করে আনন্দে মেতে উঠল ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাদ্দাম হোসেন। গল্পটা ৪৭ একরের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৫ম ব্যাচের।
আনন্দ, উচ্ছাস, রঙ-রূপে এক অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়ে সকাল ১০টায় ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৫ম ব্যাচ (২০১৩-২০১৪) শিক্ষাবর্ষ কেক কাটার পর র্যালির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মেতে উঠল রং খেলায় মানে শিক্ষা সমাপনী দিবস র্যাগ-ডে তে।
ক্যাম্পাসে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা, ঘোরাঘুরি, ক্লাস অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেসন নিয়ে দৌড়াদৌড়ি এভাবে পার হয় জীবনের সোনালি দিন গুলো। কখন যে সময় চলে যায় কেউ টেরই পায় না। চারটি বছর পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টুং টুং করে বেজে ওঠে বিদায়ের ঘণ্টা। শিক্ষাজীবনের সেই মধুময় দিনগুলো বিদায়ী শিক্ষার্থীর পিছু ডাকে। আর মধুময় দিনগুলোর স্মৃতি হৃদয়ের ফ্রেমে বেঁধে রাখতে, স্মরণীয় করে রাখতে আনন্দে, উচ্ছাসে রঙ-রুপে অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়ে পালন করেন র্যাগ-ডে।
নানা রঙের আবীরের ছোড়াছুড়িতে মলিন করে নিল তাদের এক বন্ধু আরেক বন্ধু-বান্ধবীকে। কাঁধে হাত রেখে নাচ-গানে আনন্দে বন্ধুত্বের এই সম্পর্ক বলে দিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি সুখ, দু:খ ও বর্ণিল গল্পের প্রতিফলন। সঙ্গে ছিল শিক্ষার্থীদের ফ্ল্যাশ মব। রাস্তার ধারে হতবাক করে শিক্ষার্থীরা রং ছুড়ে নেচে গেয়ে তৈরি করছে ফ্ল্যাশ মব। আবীরের ছটা আর বসন্তরের উজ্জ্বল রোদে পুরো ক্যাম্পাস যেন আজ রঙিন আর বর্ণিল। ক্যাম্পাসের জয় বাংলা চত্বর, লাইব্রেরি প্রাঙ্গণ, নতুন রাস্তা, আবাসিক হল কোন কিছুই বাদ পড়েনি এই আনন্দ থেকে।
র্যাগ-ডে একটি ইংরেজি প্রবাদ। যার বাংলা অর্থ হল পড়ালেখা শেষের হৈচৈপূর্ণ একটি দিন, র্যাগ-ডে মানেই আনন্দ হৈহুল্লোর, র্যাগ-ডে মানেই রং ছিটানো, র্যাগ-ডে মানেই পুরনো স্মৃতি মনে পড়া। ঘটা করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের এ বিদায়ী অনুষ্ঠান পালন করেন নাচ-গান আর হাসি-তামাশার মাধ্যমে। কিন্তু বাস্তবে র্যাগ-ডে কি কোনো আনন্দের না বেদনার ?
মমিন, হাসান, রাসেল, ঝুমুর, আল-আমিন, ফাতেমা, মাসুদ, তূর্ণা, সুমি র্যাগ-ডে নিয়ে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, আজ আমাদের শিক্ষা জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন, একদিক থেকে দিনটি আনন্দের আরেক দিক থেকে দিনটি বেদনার। মনে হয় এইতো সেদিন ভর্তি হলাম।টানা চার বছর একসঙ্গে একটা পরিবারের মতো ছিলাম, কিন্তু দেখতে দেখতে কেমন করে চার বছরের (বিবিএ) শেষ হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না।
আজকে থেকে হয়তবা আগের মত সবার সাথে ক্লাস, আড্ডা, গান, গ্রুপ স্টাডি এবং মজা মাস্তি করতে পারবনা। বিভিন্ন জন বিভিন্ন পেশায় চলে যাবে, সবার জন্য রইল অনেক অনেক শুভ কামনা ভাল থাকিস সবাই। সর্বপরি সবাইকে অনেক মিস করব।
ঢাকা, ১২ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: