মাগুরা লাইভ: শনিবার সকালে হলের বাইরে পায়চারি করছিল বয়ফ্রেন্ড। এর আগেও সে তার গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে একাধিকবার দেখা করেছেন হলে। তবে শনিবার তাকে চিন্তিত দেখাচ্ছিল।
কিছুক্ষণ পর জানা গেল তার গার্লফ্রেন্ডের লাশ ঝুলছে ফ্যানে। শুরু হয় হৈ-চৈ। এরই মাঝে লাপাত্তা হয়ে গেলেন সেই কথিত বয়ফ্রেন্ড। তাকে আর খুঁজে পাওয়া গেল না। মাগুরায় সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের আবাসিক হলের ঘটনা এটি।
শনিবার সুদেষ্ণা মন্ডল চৈতি নামে ওই কলেজ ছাত্রীর গলায় ফাঁস দেওয়া লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কলেজের অনার্স বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী চৈতি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার চৌগাছি গ্রামের স্কুল শিক্ষক রূপ কুমার মণ্ডলের মেয়ে। ওই শিক্ষকের অভিযোগ তার মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে রিগ্যান নামে এক ছাত্র যৌন হয়রানি করতো। তাই তার মেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে।
হোস্টেল সুপার এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর উম্মে কুলসুম নাসরিন জানান, চৈত্রি সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ হলের চতুর্থ তলায় ৪০১ নম্বর কক্ষে দ্বিতীয় বর্ষের অন্য তিন রুমমেটের সঙ্গে বসবাস করতেন। বৃহস্পতিবার রুমমেটরা বাড়িতে চলে যাওয়ার পর সে একাই কক্ষটিতে অবস্থান করছিলো। শনিবার সকালে বিভিন্ন কক্ষের মেয়েরা বের হলেও ওই কক্ষটি বন্ধই ছিল।
এদিকে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে রিগ্যান নামে যশোর এমএম কলেজের এক ছাত্র নিজেকে ভাই পরিচয় দিয়ে হরে চৈতির সঙ্গে দেখা করতে আসেন। কিন্তু আধাঘন্টা ধরে ডাকাডাকির পরও তার সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। পরে দরজা ভেঙ্গে কক্ষে ঢুকলে ওই ছাত্রীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। পরে পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করেন।
হলের ছাত্রীরা জানান, ভাই পরিচয়ে দেখা করতে আসা ছেলেটির বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুরে। তার সঙ্গে ওই ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সকাল থেকেই ওই ছেলে হলের বাইরে বেশ উদ্বিগ্ন অবস্থায় পায়চারি করছিল। পরে হলের ভেতর থেকে ওই ছাত্রীর লাশ উদ্দার করা হয়।
এদিকে খবর পেয়ে ওই ছাত্রীর বাবা স্কুল শিক্ষক রূপ কুমার মণ্ডল অভিযোগ করে তার মেয়ে চৈতিকে মোবাইল ফোনে বিরক্ত করে আসছিল রিগ্যান। তার অত্যাচারেই চৈতি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ মো. শাহাজ উদ্দিন বলেন, হল কক্ষে আত্মহত্যার ঘটনা দু:খজনক। এ বিষয়ে কলেজের ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ঢাকা, ১০ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: