Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ঢাবিতে ছাত্রলীগ কর্মীর এ কেমন নৃশংসতা?

প্রকাশিত: ৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৮, ০৩:১২

ঢাবি লাইভ: নির্মম। নিষ্টুর। অমানবিক। দেখলে যে কেউ ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেবে। সর্ব্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে পড়েও এই নিষ্টুরতার শিকার হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থী। তার নিজের ক্যালকুলেটর ফেরত চাইতে গিয়েই এই ঘটনা ঘটে। তার চোখ এখন নষ্টের পথে। কিন্তু কেন এই নৃশংসতা? এর জবাব মিলছে না। তবে জানাগেছে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করে চোখসহ বিভিন্ন স্থান জখম করেছে ছাত্রলীগের এক কর্মী। ওই হতভাগা শিক্ষার্থীর নাম এহসান রফিক। তিনি ঢাবির দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র।

এহসান রফিক ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, তার নিজের ক্যালকুলেটর ফেরত চাইতে গিয়ে মঙ্গলবার রাতভর তাকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেলের নির্দেশে মারধর করা হয়েছে। মারধরের পর আহত শিক্ষার্থীকে একটি কক্ষে বুধবার দিনভর আটকে রাখা হয়।

আহত এহসান জানান, মার্কেটিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ওমর ফারুক প্রায় তিনমাস আগে তার কাছ থেকে ক্যালকুলেটর ধার নেন। এহসান ওমর ফারুকের কাছে প্রায়ই ক্যালকুলেটর দাবি করতেন। কিন্তু ওমর ফারুক ক্যালকুলেটর পরে দিয়ে দিবে বলে জানান।

সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে এহসান ক্যালকুলেটর দাবি করলে ওমর ফারুক তাকে মারধর করেন। তিনি হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আরিফের (আইইআর) মাধ্যমে এহসানকে টিভি রুমে ডেকে নেন।

এ সময় টিভিরুমে উপস্থিত ছিলেন হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তানিম (আইইআর) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিম ইরতিজা শোভন (উর্দু) ও আবু তাহের (পপুলেশন সাইন্স)। তারা এহসানকে শিবির অপবাদ দিয়ে মোবাইল কেড়ে নিয়ে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট চেক করেন। কিন্তু তারা ফেসবুকে কিছুই না পেয়ে জোরপূর্বক শিবির স্বীকারোক্তি আদায়ে তাকে বেদম মারধর করেন। তারা মৌখিকভাবে এহসানকে হল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়ে হল গেটে বের করে দেন।

সেখানে আরেক দফা ওমর ফারুক ও রুহুল আমিন, সদস্য সামিউল ইসলাম সামী, আহসান উল্লাহ, উপ-সম্পাদক মেহেদী হাসান হিমেলের নেতৃত্বে রড, লাঠিসোটা দিয়ে তাকে বেদম প্রহার করা হয়। মারধরের এক পর্যায়ে এহসান জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। অবস্থা বেগতিক দেখে আরিফ রাত সাড়ে তিনটায় এহসানকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

সেখান প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে হল শাখা সভাপতি তাহসান আহমেদের (১৬ নম্বর) কক্ষে তথ্য না প্রকাশের জন্য হুমকি দিয়ে আটকে রাখা হয়। সকালে এহসানের অবস্থা খারাপ হলে তাকে আবার ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে হলে এনে একই কক্ষে আটকে রাখেন তারা।

খবর পেয়ে এহসানের বাবা ঢাকায় এসে তাকে উদ্ধার করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তিনি লিখিত অভিযোগ দেন। এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বলেন, এহসানের চোখের কর্নিয়া মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

হল শাখা সভাপতি তাহসান আহমেদ রাসেল বলেন, ক্যালকুলেটর নিয়ে মারধর করা হয়েছে। যারা মারধর করেছে তাদেরকে হল থেকে বের করে দিয়েছি।

ঘটনাটি অবহিত করা হলে হল প্রাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মাহবুবুল আলম জোয়ারর্দার বলেন, বিষয়টি জানি না। আমি দেখছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর প্রফেসর গোলাম রব্বানী বলেন, বিষয়টি দেখব। বিষয়টি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগকে অবহিত করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ সত্য হলে দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 


ঢাকা, ০৭ ফেব্রুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ