Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ইবি ভিসি: মনে হচ্ছিল আমার জীবনের শেষ মুহূর্ত!

প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারী ২০১৮, ০৩:০২

ইবি লাইভ: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. হারুন অর রশিদ আসকারী গভীর রাতে হামলার শিকার হয়েছেন। এনিয়ে ক্যাম্পাসে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। ভিসি জানান, ঢাকায় প্রোগ্রাম শেষে রাত সোয়া ১০টার দিকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি।

আমি সাধারণত পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ ফেরি ঘাট দিয়ে পার হয়ে রাজবাড়ি-কুষ্টিয়া রুটে ক্যাম্পাসে আসি। তবে আমার সাথে ব্যক্তিগত সহকারি রেজাউল করিম থাকায় তাকে বাসায় নামিয়ে দেওয়ার জন্য এবং অপ্রতিকর ঘটনা এড়াতে নিজের যাতায়াতের সাধারণ রুট পরিবর্তন নতুন রুট ঝিনাইদহ দিয়ে প্রবেশ ক্যাম্পাসে আসার সিদ্ধান্ত নেই। রেজাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আমরা ক্যাম্পাসের দিকে আসতে থাকি।

ভিসি বলেন, গাড়াগঞ্জ পার হওয়ার পর হঠাৎ আমার গাড়ি সামনে একটি গাছের গুড়ি দেখতে পেয়ে গাড়ি থামিয়ে দেন চালক। বিপদ বুঝতে পেরে হর্ণ (পুলিশের হর্ণ) দেয় এবং গাড়ি ঘুরিয়ে পিছন দিকে যাওয়ার চেষ্ট করে চালক।

কিন্তু রাস্তায় ট্রাক থাকায় গাড়ি ঘোরাতে ব্যর্থ হয়। ঠিক সেই মুহুর্তে গাড়ির বাম পাশের গ্লাসে আঘাত করতে থাকে কে বা কারা। গাড়িতে হামলা হয়েছে বুঝতে পেরে চালক ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি টান দিয়ে গাছের গুড়ির একদম নিকটে নিয় যায় গাড়ি। গাছ টপকিয়ে আসতে চায়। কিন্তু গাছটি বড় হওয়াতে তা সম্ভব হয় না। এতক্ষণে হামলাকারীরা বেশ খানিকটা পিছনে পড়ে গেছে। আমি ঠিক কি করব তা বুঝতে পারছিলাম না।

এই ফাঁকে আমার চালক বলেন ‘স্যার আপনি গাড়ি থেকে বের হয়ে পালান।’ চালকের কথা শুনে আমার বুঝ ফিরে আসে। আমি প্রাণ বাঁচাতে পাশের জঙ্গলে আশ্রয় নেই। কিন্তু হামলাকারীরা আমাকে খুঁজে পেয়ে যায়। তারা আমার দিকে শক্তি শালী টর্চলাইট ধরে এগুতে থাকে।

এ সময় আমি তাদের হাতে রামদা দেখতে পাই। তখন আমার মনে হল যেন এটাই আমার শেষ দিন। মৃত্যুর প্রস্তুতি নিয়ে নিলাম। রামদা দেখে আমি শেষ বারের মতো আল্লাহর নাম নিলাম। তারা আমার কাছে এসে টাকা দাবি করে। তখন আমি দীর্ঘ শ্বাস ত্যাগ করে আশ্বস্থ হই। এরপর আমি তাদরে জানাই আমার গাড়িতে টাকা আছে। তারা আমাকে অস্ত্রের মুখে গাড়ির কাছে নিয়ে আসে। কিন্তু তখন আমি গাড়ির ভেতর মানি ব্যাগ পাইনি।

আমার মনে হয় তারা আগেই আমার মানি ব্যাগ নিয়েছে। ‘মানি ব্যাগ পাচ্ছি না’ একথা শুনে তারা গালমন্দ করতে থাকে। প্রাণ বাঁচাতে ল্যাপ্টপ দিতে চাইলাম। কিন্তু তারা ল্যাপটপ নিল না।

এতক্ষণে আমার গাড়ি পেছনে বেশ কিছু ট্রাক এসে জমেছে। অনেক গাড়ি হর্ণ বাজাচ্ছে। হামলাকারীরা আমাকে গাড়ি পাশে রেখে বলে ‘এক পা নড়াচড়া করবি না’। এরপর তারা আমার গাড়ির পেছনে দিকে চলে যায়। আমি গাড়ি মধ্যে আবার উঠে বসি। আবার হামলা হতে পারে এই ভয়ে গাড়ি থেকে নেমে গাড়ি সামনের দিকে দৌড় দেই।

মিনিট খানেক দৌড়ানোর পর একটি বাড়ি দেখতে পাই। বাড়ি প্রবেশ করে ডাকা ডাকি করলে আমাকে তারা সাহায্য করে। পরে তারা কয়েক বাড়ি পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তার বাড়িতে নিয়ে যায়। আমি ওই কর্মকর্তার বাড়িতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে খবর দিতে বলি।

তারা প্রক্টরকে খরব দেয়। এই পুরো ঘটনাটি ঘটেছে প্রায় আধাঘন্টার ধরে। ঘটনা শুরুর প্রায় ঘন্টা ঘানেক পর ইবি থানা থেকে পুলিশ গিয়ে আমাকে নিয়ে আসে। ভোর চারটা ৫৪ মিনিটে আমি ক্যাম্পাসে পৌছি।

 

ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ