এমসি লাইভ: শতবর্ষী মুরারিচাঁদ কলেজের ঐতিহ্যবাহী ছাত্রাবাসের অবস্থান সিলেট নগরীর বালুচরে। ১৯২০ সালে প্রায় ৬০০ শতক জায়গার ওপর নির্মিত হয় আসাম প্যাটার্নের সেমি পাকা আদলের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাস।
ছাত্রলীগ-শিবির দ্বন্ধ আর অস্থির ছাত্ররাজনীতির কবলে পরে ২০১২ সালে ভস্মীভূত হয় ঐতিহ্যবাহী ছাত্রাবাসটির ৪২ টি কক্ষ। সংস্কারের পর ২০১৬ সালে কলেজ কর্তৃপক্ষের শিক্ষার্থী উঠানোর বিজ্ঞপ্তিতে তেমন সাড়া মেলেনি, যদিও আগুনের পোড়া গন্ধের স্মৃতি আর স্নায়ুচাপ নিয়ে আবাসিক শিক্ষার্থীরা উঠে চার তলা বিশিষ্ট নতুন ভবনসহ সাতটি ব্লকের ছাত্রাবাসে।
২০১৭ সালের জুলাইয়ে আবারও কলেজ ছাত্রলীগের দু'গ্রুপের দ্বন্ধে ভাঙচুর হয় ছাত্রাবাসটির তিনটি ব্লকের ৩৯টি কক্ষ। এসময় ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্থ হয় ছাত্রাবাসের ৫নং ব্লকের ১৪টি রুমের দরজা-জানালা। শিক্ষার্থীদের দাবীতে কয়েকমাস পরেই টিন, শীট দিয়ে সংস্কার করা হয় ব্লকটির ভাঙা দরজা-জানালা।
অাঘাতে অাঘাতে বিধ্বস্ত হওয়া ব্লকটির শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টায় আগুনে পোড়ার গন্ধ এখন আর না মিললেও পাওয়া যায় ফুলের ঘ্রাণ।
সরেজমিনে ছাত্রাবাস ঘুরে দেখা যায়, ছাত্রাবাসের পঞ্চম ব্লকের সামনে করা বাগানে গোলাপ, সূর্যমূখী, ডালিয়া, বেলী, গাঁধা প্রভৃতিসহ বাহারি রঙের ফুল। পাশাপাশি সবজি হিসেবে পেঁপে, টমেটো আর লালশাক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে ফুল বাগানের, সাথে সাথে পুরো ছাত্রাবাসের।
ফুল বাগানের পরিচর্যার জন্য বাগানেই সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে গোবরের স্তুপ। ব্লকটির শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গেলো নভেম্বরে শুরু করা ফুল বাগানের পরিচর্যা কাজ প্রতিদিন সকালে মিলেমিশে করেন ব্লকটির শিক্ষার্থীরা। ফুল বাগান তৈরীতে অর্থায়ন ও সহযোগীতা করেছেন ছাত্রাবাসের তত্বাবধায়ক জামাল উদ্দিন।
ছাত্রাবাসের দুর্বিষহ স্মৃতি মুছতে ফুলের বাগান করেছে ৩নং ব্লকের শিক্ষার্থীরাও। ঘুরে দেখা মিললো বাহারি রঙের ফুল ফুঁটেছে এ বাগানেও।
৫নং ব্লকের আবাসিক ও মাস্টার্স শেষ পর্ব শিক্ষার্থী মতিউর রহমান বলেন, 'দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ফলে ছাত্রাবাস তার জৌলুস হারিয়ে ফেলেছিলো। আমাদের ফুল বাগান সেখান থেকে উত্তরণের একটি পদক্ষেপ। ছাত্রাবাসটি বন্ধ থাকাকালীন সময়ে জন মানবশূন্য ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিলো, আমরা পঞ্চম ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা এর থেকে উত্তরণে ফুল বাগান করার মাধ্যমে সেটির শুরু করতে পেরেছি।'
এমসি কলেজ ছাত্রাবাস তত্বাবধায়ক জামাল উদ্দিন বলেন, 'ছেলেরা ফুল বাগান করতে আগ্রহী ছিল। তাদের উদ্যোগী মনোভাব, পরিশ্রম দিয়ে সার্বক্ষনিক বাগানের পরিচর্যা করায় অাজ ফুল বাগানের এ সৌন্দর্য।' শিক্ষার্থীদের এ কাজে সহযোগিতার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবদিক দিয়েই কাজটি ভালো, কোনো ধরনের ক্ষতি নেই। ছেলেরা ফুল বাগানের পরিচর্যা করবে, আর এমনিভাবে তাদের মন মানসিকতাও সুন্দর হবে।
ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: