নিটার লাইভ: “তার মাথার ওপরে দুদকের ২০ মামলা এখনো। চুরি করেছেন গরীবের চাল, দখল করে রেখেছেন সরকারি জমি, প্রকাশ্য দিবালোকে তার সশস্ত্র ক্যাডারেরা এখনো ঘোরাঘুরি করে। এমন কোন অপরাধ নেই যেটা করেন নি।
বলছিলাম বিএনপির সাবেক হুইপ ভুমিদস্যু শহিদুল হক জামাল ও তার দুই পুত্র সাজেদুল হক এবং শফিকুল হকের কথা। সম্প্রতি তাদের হত্যা হুমকিতে প্রাণনাশের আতংকে দিনপাত করছে দেশের সর্ববৃহৎ টেক্সটাইল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রায় ১২০০ শিক্ষার্থী।
জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (নিটার), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন (বিটিএমইএ) এবং বাংলাদেশ সরকারের পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলোজি’ অনুষদের অধীনে এখানে ৪ বছর মেয়াদি বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু হয়, কয়েক বছর ধরে চলছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ফ্যাশান ডিজাইনিং-এর মত বিভাগ।
এখানকার শিক্ষার্থীরা অতি অল্প সময়ে টেক্সটাইল সেক্টরে সাফল্যের সাক্ষর রেখেছে। দেশের ভেতরে তো বটেই দেশের বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে নিটারের সুনাম। প্রচুর ছাত্রছাত্রী এই ইনস্টিটিউট থেকে অধ্যয়ন করে বের হয়ে সরকারী বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যোগদান করে নিজেদের মেধা ও মননের স্বাক্ষর রেখে চলেছে।
এখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা সম্পূর্ণ রাজনীতি মুক্ত শান্ত মনোরম পরিবেশে, সরকারী জায়গার যখন নিজেদের পড়ালেখা ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডে মগ্ন তখন একটি কুচক্রী গোষ্ঠী তাদের শান্ত সুনিবিড় প্রাণের ক্যাম্পাসটির সরকারী জায়গা অবৈধ ভাবে দখলের চক্রান্ত করে চলেছে। দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের ক্যাম্পাসের ৩.৭৬ জায়গা দখল করে ছিল পার্শ্ববর্তী কোহিনুর স্পিনিং মিলের মালিক চক্র। যার মূল হোতা বিএনপির সাবেক হুইপ ভুমিদস্যু শহিদুল হক জামাল ও তার দুই পুত্র সাজেদুল হক এবং শফিকুল হক।
অবৈধ ভাবে পেশী শক্তি ও গুন্ডা বাহিনী দিয়ে দখল করে রাখা জায়গাটি ক্যাম্পাসে প্রবেশের পথে হওয়াতে নিজের ক্যাম্পাসে ছাত্র-ছাত্রীদের আসা যাওয়ার পথে সমস্যার মুখে পড়তে হয়, হেঁটে যেতে হয় একটি সরু পথে দিয়ে। যেন তারা নিজের ঘরেই অনাহুত। এছাড়া নিরাপত্তাহীনতার কারণে ছাত্রীদের জন্য সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসে প্রবেশ হয়ে ওঠে এক বিভীষিকা।
সত্য হচ্ছে অন্যায় বেশিদিন টিকে থাকতে পারে না। সম্প্রতি মহান আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের প্রাপ্য সরকারি জায়গাটি বুঝে পায়। প্রায় চার একর বেদখল জায়গা ফিরে পেয়ে সাধারন ছাত্রছাত্রীরা যখন উল্লোসিত ঠিক তখনই সক্রিয় হয়ে ওঠে ভুমিদস্যু শহিদুল হক জামাল, তার দুই পুত্র সাজেদুল হক, শফিকুল হক এবং তাদের ক্যাডার বাহিনী।
অস্ত্রধারী ক্যাডারদের ক্রমাগত ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় ক্যাম্পাসের আশেপাশে। তারা একাধিক শিক্ষার্থীকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। ছাত্রদের বলা হয় জায়গা ছেড়ে দিতে। শহিদুল হক জামাল সরাসরি বলেন, জায়গা না দিলে অথবা বেশি বাড়াবাড়ি করলে ছাত্রদের গুম করে দেয়া হবে।
এমন পরিস্থিতিতে আমারা সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোকাবেলা করবো এই সন্ত্রাসীদের। আমরা চাই সংশ্লিষ্ট সবকটি মহলের সদয় দৃষ্টি। আমরা চাই নিরাপত্তা। আমরা চাই আমাদের ন্যায্য হিস্যা। আমাদের দাবী-
১. সম্প্রসারিত এলাকায় স্থায়ী সুদৃঢ় দেয়াল তুলে দেয়া হোক যাতে এই ভূমিদস্যু শহিদুল হক জামাল এবং তার পোষা সন্ত্রাসীরা আমাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে না পারে।
২. ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হোক যাতে কোন ছাত্রের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা না করতে আরে অথবা রাতের অন্ধকারে জায়গা বেদখল করে নিতে না পারে।
৩. ভুমিদস্যু শহিদুল হক জামাল এবং তার ক্যাডার বাহিনীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক।
ঢাকা, ২৫ জানুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: