Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ২০শে মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ডিসি অফিসে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচী

প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বার ২০১৭, ২০:৩৬



শেরপুর লাইভ: শেরপুরের বিভিন্ন কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বোর্ডের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিবিধ খাত, কোচিং ও বিশেষ ক্লাসের নামে জনপ্রতি শির্ক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে কলোজ কর্তৃপক্ষ।

সোমবার সকালে সদর উপজেলার জমশেদ আলী মেমোরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রায় অর্ধ শত হত দরিদ্র শিক্ষার্থী এইচএসসি ফরমফিলাপে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের প্রতিবাদে শেরপুর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

একই সাথে এসময় তারা তাদের ফরমফিলাপে’র জন্য কেবলমাত্র বোর্ড ফি দিয়ে ফরমফিলাপ করার দাবীতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বারান্দায় অবস্থান নেয়। পরে জেলা প্রশাকের হস্তক্ষেপে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা কেবল মাত্র বোর্ড ফি দিয়ে ফরমফিলাপের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে তারা অবস্থান তুলে নেয়।

জমশেদ আলী মেমোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বোর্ড কতৃক ২০১৮ সালে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য শিক্ষাবোর্ড বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ২ হাজার ৪৮৫ মানবিক ও ব্যবসা শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীদের জন্য ১ হাজার ৮৮৫ টাকা ধার্য করে।

কিন্তু সদর উপজেলার লছমনপুর গ্রামের জমশেদ মেমোরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে কর্তৃপক্ষ উল্লিখিত ফি’র চেয়ে জনপ্রতি প্রায় ৫ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত ফি আদায় করছে। ওই ৫ হাজার টাকার মধ্যে ১ হাজার ৮৫৫ টাকা পরীক্ষা ফি এবং বিবিধ খাতে ৯শ ৯৫ টাকার রশিদ দেওয়া হচ্ছে। বাকী সাড়ে তিন হাজার টাকা বিশেষ ক্লাস করানো হবে এমন কথা বলে নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের কাছ থেকে সাবজেক্ট প্রতি আরও ৫শ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে বলে ওই লিখিত অভিযোগে জানায় শিক্ষার্থীরা।

অতিরিক্ত ফি দিতে আপত্তি জানালে কতিপয় শিক্ষক তাদের নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলেও ছাত্রদের অভিযোগ। ফলে গ্রামের অসচ্ছল দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে।

ওই কলেজের জুয়েল বাদশা নামে ব্যবসা শিক্ষার এক দরিদ্র ছাত্র জানান, পরীক্ষার ফি ১ হাজার ৮৫৫ টাকার বিপরীতে কলেজ কর্তৃপক্ষ আমার কাছ থেকে ৪ হাজার ৪৯৫ নিয়েছে। রশিদ চাইলে তারা আমাকে মাত্র ২ হাজার ৮৫০ টাকার রশিদ দিয়েছে। ৩ হাজার ৫শ টাকা কোচিং এর জন্য নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন আমরা খুব গরীব ঋণ করে টাকা এনে পরীক্ষার ফরম পূরণ করেছি।

একই কলেজের ছাত্র ধোবারচর গ্রামের হারুণ মিয়া, নূর ইসলাম বলেন, ফরম পূরণ করতে প্রায় ৬ হাজার টাকা চেয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এত টাকা যোগাড় করতে তাঁর হতদরিদ্র কৃষক বাবা হিমশিম খাচ্ছে বলে সে জানায়।

শহরের মডেল গার্লস কলেজে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ফরমফিলাপের জন্য বোর্ড ফি’র সাথে কোচিং এর টাকা না দিলে স্যারেরা ফরমই দিচ্ছে না।

একই ভাবে শেরপুর সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, ডা. সেকান্দর আলী কলেজ ও মডেল গার্লস কলেজেও ফরমফিলাপের সাথে অতিরিক্ত ফি বা অর্থ আদায়ের অভিযোগ করেছেন কলেজের অসংখ্য শিক্ষার্থী।

এ ব্যাপারে জমশেদ আলী মেমোরিযাল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রিন্সিপাল মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষার ফি, আনুসাংঙ্গিক ও সেশনচার্জ ধরে আমরা ২ হাজার ৮৫০ টাকা নিচ্ছি। বিশেষ ক্লাসের টাকার বিয়য়টি কলেজের শিক্ষক ও ছাত্ররা আলাপ-আলোচনা করে সাড়ে ৩ হাজার টাকা নির্ধারন করেছে।

শেরপুর সরকারী কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল সারোয়ার হোসেন বলেন, ফরমফিলাপে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে না। তবে বোর্ডের ম্যানুয়াল অনযায়ী ৪ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত ক্লাসের জন্য নেয়া হচ্ছে।

মডেল গার্লস কলেজের প্রিন্সিপাল মো. আতাউর রহমান হেলাল বলেন, আমরা আমাদের কলেজে ফরমফিলাপে অতিরিক্ত কোন ফি আদায় করছি না। তবে কোচিং এর বিষয়টি বাধ্যতামূলক নয় এবং কলেজ সংশ্লিষ্টও নয়।

জেলা প্রশাসক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন ছাত্রদের লিখিত অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য কলেজের আরো কোন দরিদ্র শিক্ষার্থী টাকার জন্য ফরমফিলাপ করতে সমস্যা হলে আমার কাছে আবেদন করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ