ভোলা লাইভ: বাংলাদেশের ইতিহাসে আলোকিত এক মহিয়সী নারী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মজিব। ইতিহাসে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেবল একজন প্রাক্তন রাষ্ট্রনায়কের সহধর্মিনীই ছিলেনা, বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে অন্যতম এক নেপথ্য অনুপ্রেরনাদাত্রী।
বাঙালি জাতির সুদীর্ঘ স্বাধীকার আন্দোলনের প্রতিটি পদক্ষেপে তিনি বঙ্গবন্ধুকে সক্রিয় সহযোগিতা করেছেন। ছায়ার মতো মত অনুসরণ করেছেন অনুপ্রেরনা দিয়ে গেছে স্বামী বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে।
তার নিরলস শ্রম, আত্মত্যাগ, অসামান্য ভূমিকার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসাবে স্থান করে নিয়েছে। তাই বঙ্গমাতার জীবনাদর্শ চর্চার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে দেশ প্রেমে উদ্ধুদ্ধ হতে হবে বলে জানান।
সোমবার ভোলা সরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কলেজে এর আয়োজনে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বাংলাদেশের ইতিহাসে আলোকিত এক মহিয়সী নারী এই শিরোনামে এক সেমিনারে বক্তারা একথা বলেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন- ভোলা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভোলা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবদুল মমিন টুলু।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন- কলেজের প্রাক্তন প্রফেসর দুলাল চন্দ্র ঘোষ, প্রফেসর মুহাম্মদ রুহুল আমিন জাহাঙ্গির, সহকারী অধ্যক্ষ প্রফেসার আখের আলী। অনুষ্ঠানে সভাপত্বিত করেন ভোলা সরকারি শেখ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো: শামসুল আলম ।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন- ইতিহাস বিভাগের লেকচারার মো: শাহাব উদ্দিন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসার মো: এনায়েত উল্ল্যাহ, ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবীর প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন বাংলা বিভাগের লেকচারার হাফিজুর রহমান । শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য প্রধান করেন- একাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান রুপা।
এসময় বক্তারা আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, শেখ ফজিলাতুন্নেছার মতো ধীরস্থির, বুদ্ধিদীপ্ত, দূরদর্শী, নারীর সাহসী, বলিষ্ঠ, নির্লোভ ও নিষ্ঠাবান ইতিবাচক ভূমিকা শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হতে সহায়তা করেছে। জনগণের কল্যাণে সমগ্র জীবন তিনি অকাতরে দুঃখবরণ এবং সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন।
সেই বিবেচনায় বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণীয় একটি নাম। একটি ইতিহাস। মনেপ্রেনে একজন আদর্শ নারী। তার বিচক্ষণ উপদেষ্টা ও পরামর্শ ফলে বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধুকে হিসাবে গড়ে তোলতে সহায়তা করেছে। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুর সুখ-দুঃখের সাথী এবং বঙ্গবন্ধুর প্রেরনা ও শক্তির উৎস হিসাবে কাজ করে গেছেন।
এসময় তারা আরো বলেন, তার সদয় আচরণ ও বিনয়ে মুগ্ধ ছিল সবাই। সন্তানদের যেমনি ভালবেসেছেন তেমনি শাসন করেছেন। পিতা মাতা উভয়েরই কর্তব্য তিনি শেষ দিন পর্যন্ত পালন করে গেছেন। বেগম মুজিব ছিলেন কোমলে কঠোরে মিশ্রিত এক দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সাহসী নারী।
স্বামীর আদর্শে অনুপ্রনিত হয়ে তিনি সন্তানদের গড়ে তোলেন। তার কাছে সহযোগিতা চেয়ে কেউ কখনও রিক্ত হস্তে ফিরে যায়নি।
কারাগারে আটক নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নেয়া থেকে শুরু করে পরিবার-পরিজনদের যে কোন সংকটে পাশে দাঁড়াতেন তিনি। বহু কন্যা দায়গ্রস্তদের পিতাকে ও ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য তিনি সহযোগিতা করেছেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাত্রিতে জাতির পিতার হত্যাকারীদের হাতে বেগম মুজিবও নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার হন। কিন্তু বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে অন্যতম এক প্রেরনাদায়িনী মহীয়সী নারী হিসেবে বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ই আগষ্ট ছিলো জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৩০ সালের এইদিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামের এক সভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জন্মগ্রহন করেন। তাকে স্বরন করেই এই সেমিনার এর আয়োজন করা হয়।
ঢাকা, ২১ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: