
ববি লাইভ: কীর্তনখোলার কোল ঘেষে গড়ে ওঠা দক্ষিণ বঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠবিদ্যাপীঠ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)। হাজারো শিক্ষার্থীর স্বপ্নের ক্যাম্পাস, হৃদয়ের স্পন্দন এবং আবেগ-অনুভূতির জায়গা। চান্স পাওয়ার পর প্রত্যেকেই স্বপ্নের ক্যাম্পাস নিয়ে মনে মনে আঁকতে থাকে নানা স্বপ্ন, নানা পরিকল্পনা। তেমনিভাবে ক্যাম্পাসের প্রথম দিন কীভাবে কাটাবে এবং কী করবে তা নিয়ে থাকে নানা চিন্তা। সিনিয়ররা প্রস্তুতি নিতে থাকে কীভাবে নবীনদের বরণ করে নেওয়া যায়। প্রস্তুতি শেষে ওরিয়েন্টেশনের দিনেই সেটি প্রকাশ পায়।
নতুন ব্যাচটি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একাদশতম ব্যাচ৷ ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, নবীন শিক্ষার্থীরা সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করে। অনেক নবীন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আবার তাদের অভিভাবকদেরও দেখা গেছে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা এসেছেন সাজগোজ করে নানা আয়োজনে নবীনদের বরণ করে নিতে। এদিন প্রত্যেক বিভাগে পৃথক পৃথকভাবে ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের আয়োজন করেন।
শিক্ষকরা নবীনদের রজনীগন্ধা ও গোলাপ ফুল উপহার দেয়ার মাধ্যমে ক্যাম্পাসে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয়। এ সময় শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতিমূলক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলার জন্য নবীনদের প্রতি আহ্বান জানান। সিনিয়রাও নবীনদের সঙ্গে পরিচিত হয় এবং বিতরণ করে রজনীগন্ধা ও লাল গোলাপ।
ক্যাম্পাসের প্রথম দিনের অনুভূতি কেমন? এ নিয়ে কথা হয় অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রানার সাথে। তিনি অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, আজকের এই ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের জন্য আমি অনেক এক্সাইটেড। আমাদের ক্যাম্পাস সবুজ শ্যামল হওয়ায় অনেক ভালো লেগেছে। কিন্তু মনে মনে একটা ভীতি কাজ করতেছিল যে আমাদের শিক্ষক, বড় ভাই-আপু, সহপাঠীরা যে কেমন হবে? কিন্তু আসার পর দেখলাম তারা অনেক ভালো এবং হেল্পফুল আমার খুব ভালো লেগেছে তাদের সকলের ব্যবহারে কথা বার্তায় আমি মুগ্ধ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শুরু হল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন অনেক চড়াই-উৎরাই পার করার পর আজকে জীবেনর একটি আশা পুরন হলো আমার। আজকের এই দিনটা আমার জীবনের স্মরণীয় একটি দিন হয়ে থাকবে যা কখনো ভোলার নয়।
সাতক্ষীরা থেকে আসা সমাজবিজ্ঞান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী আবদুর রহমান ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দিন ছিল আজ। বিভাগের সিনিয়র ভাইয়া আপুরা আমাদের খুবই সুন্দরভাবে এই ক্যাম্পাসে বরণ করে নিয়েছে। শিক্ষকদের দিক নির্দেশনা ও পরামর্শগুলো আগামীতে নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনকে রাঙিয়ে তুলতে সাহায্য করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের আশেপাশে নবীনদের ছবি তোলা, ভিডিও করা যেন থামছিল না। সেই সকাল থেকে শুরু, চলছে সন্ধ্যা পর্যন্ত। কখনো ছবি তোলা, কখনো ঘাসের ওপর বসে লম্বা আড্ডা অথবা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন চত্বরে ঘোরাঘুরি। দিনভর মাতোয়ারা ছিল নবীনরা।
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী নবীন শিক্ষার্থী শাকিল ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, আজকের এই দিনটি সম্পর্কে আমি আগে শুধু শুনেই এসেছি আমার আজকে তার বাস্তবায়ন হলো। আজকে ভাইদের অমায়িক ব্যবহার শিক্ষকদের বন্ধুসুলভ আচরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মনমুগ্ধকর পরিবেশ সবকিছুই আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আমরা আজকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পদার্পণ করতে পেরে অনেক খুশি হয়েছি। আজকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম দিন স্মৃতিপটে শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে থাকবে।
ইতিহাস বিভাগের এর ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, আমি আনন্দিত যে আমি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হতে পেরেছি। আমার স্বপ্ন ছিল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। আমার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ববির ক্যাম্পাস আমার খুব ভালো লেগেছে।
কথা হয় মার্কেটিং বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নূর মোহাম্মদের সাথে তিনি ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, আজকে ক্যাম্পাসে যারা নতুন এসেছে তাদেরকে নতুন এই ক্যাম্পাসে স্বাগতম জানাই। নতুনদের পদচারণায় সবুজ-শ্যামল ক্যাম্পাস আবার মুখরিত হয়ে উঠেছে। মনে হচ্ছে নতুনদের সাথে মিলন মেলার আয়োজন হয়েছে।
ঢাকা, ০১ ফেব্রুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজে//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: