Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

রি-ইউজেবল ক্লোথ প্যাড তৈরি করলো স্টেপস এহেড

প্রকাশিত: ৯ জুলাই ২০২২, ২৩:৩০

রি-ইউজেবল ক্লোথ প্যাড

ববি লাইভ: প্রথম দিকে মেয়েদের জীবনকে আধুনিকময়ী করার ক্ষেত্রে স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আবিস্কৃত এই প্যাড পিরিয়ডকালীন অনেক অস্বস্তিও কমিয়েছিল। কিন্তু দিন যতই যাচ্ছে ততই এই প্যাড ব্যবহার সম্পর্কে অসচেতনতা জন্ম দিচ্ছে নানাবিধ সমস্যা।

গবেষণা বলছে, একজন নারী তার জীবনে পুরো মাসিককালীন সময়ে গড়ে ১২,০০০ থেকে ১৬,০০০ সিঙ্গেল ইউজ প্যাড বা বাজারের প্রচলিত স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন। এ ধরনের প্যাডে বিভিন্ন ধরনের ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয় যেমনঃ সুগন্ধিযুক্ত ক্যামিকেল, ক্যামিকেল জেল, রেসিডিউস্ এবং এডহেসিভ। একই সাথে এ ধরনের স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি হয় প্লাস্টিক, কটন, সিনথেটিক ফাইবার এবং উড পাল্প এর সমন্বয়ে যার সাথে যুক্ত থাকে বিভিন্ন কীটনাশক এবং উদ্ভিদনাশক। একবার ব্যবহারের পর বাজারে প্রচলিত এ ধরনের সিঙ্গেল ইউজ স্যানিটারি ন্যাপকিনের গন্তব্য হয় নদীনালা, সাগরের তলদেশে অথবা মাটির স্তূপে।

একাধিক গবেষণা থেকে জানা যায় এ ধরনের সিঙ্গেল ইউজ প্যাডে অপচনশীন উপাদান থাকায় তা মাটি বা পানির সাথে মিশে যেতে সময় লাগে ৮ শত বছর যা বর্তমানে মারাত্মক পরিবেশ দূষন সৃষ্টিকারী উপাদান হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী এধরণের দূষণ সৃষ্টিকারী সিঙ্গেল ইউজ স্যানিটারি ন্যাপকিনের পরিবর্তে কাপড়ের তৈরি "রি-ইউজেবল ক্লোথ প্যাড" কে টেকসই সমাধান হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। এ ধরনের প্যাড বায়োডিগ্রেডেবল হওয়ায় সহজেই মাটির সাথে মিশে যায়। এছাড়াও ব্যাবহারের পর ধুয়ে জীবানুমুক্ত করে প্রায় ৩-৫ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায় তাই এটা সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব। এটা তৈরিতে কোনো ধরনের ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয় না বিধায় এটা খুবই স্বাস্থ্যকর ও আরামদায়ক।

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত নিজেস্বভাবে ব্যবহারের জন্য "রি-ইউজেবল ক্লোথ প্যাড" তৈরি ও বাজারজাত করা হয় না। স্টেপস এহেড প্রথমবারের মতো তাদের নিজেস্ব ল্যাবে বিভিন্ন ডিজাইনের সাশ্রয়ী, সুলভ ও পরিবেশবান্ধব এ ধরনের প্যাড ডিজাইন করেছে এবং ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানের কারিগরী সহযোগিতায় তা উৎপাদন শুরু করেছে। স্টেপস এহেড টিম মনে করে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে উচ্চমূল্যের সিঙ্গেল ইউজ স্যানিটারি ন্যাপকিনের পরিবর্তে "রি-ইউজেবল ক্লোথ প্যাড" এর মাধ্যমে প্রান্তিক ও দরিদ্র নারীদের কাছে মাসিককালীন স্বাস্থ্যসুবিধা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব খুব সহজেই।

স্টেপস এহেড এহেডের একজন ভলেন্টিয়ার নুরেন নাহিয়ান খুশবু ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, “ধীর গতিতে হলেও স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবহার এখন গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। প্যাড যেহেতু টাকা দিয়ে কিনতে হয়, সেক্ষেত্রে প্যাডের খরচ সাশ্রয় করার জন্য গ্রামাঞ্চলে মেয়েদের মধ্যে একটি প্যাড অধিক সময় ব্যবহার করার প্রবণতা দেখা যায়। যা জরায়ুর জন্য ভয়াবহ রকমের খারাপ। এ ধরনের সমস্যা থেকে পরিত্রাণের লক্ষে এবং প্রান্তিক মহিলাদের কথা বিবেচনায় রেখে প্রথমবারের মতো স্টেপস এহেড সফলভাবে তৈরি করল রি- ইউজেবল ক্লোথ প্যাড”।

এ বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও স্টেপস এহেড এর প্রতিষ্ঠাতা দিলআফরোজ খানম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। করোনার প্রভাবে কিছুটা ব্যাহত হলে পরবর্তিতে আমরা এটার সকল কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছি। আমি মনে করি, "জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ দেশ হিসাবে বাংলাদেশের উচিত এ ধরনের প্যাডের প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন এবং জেন্ডার বৈষম্য দূরীকরণে প্রান্তিক নারীদের উদ্ভুদ্ধ করা’।

উল্লেখ্য, স্টেপস এহেড হলো ২০২১ সালের জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত একটি সংগঠন। এটি "রি-ইউজেবল ক্লোথ প্যাড" এর প্রসার ও বিস্তারে আরো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণে বদ্ধপরিকর এক্ষেত্রে তারা সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের সহায়তা কামনা করছে।

ঢাকা, ০৯ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজে//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ