Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ববির "ভোলা রোডের" সৌন্দর্যে মন কাড়ছে সকলের

প্রকাশিত: ৩ জুলাই ২০২২, ০৯:৫৯

ববির "ভোলা রোডের" সৌন্দর্যে মন কাড়ছে সকলের

জাকির হোসেন,ববি লাইভ: নগরীর স্বাভাবিক জীবনের ফাঁকে এক চিলতে প্রশান্তির জন্য ঘুরাঘুরির প্রয়োজন? ঘুরার জন্য প্রকৃতির মাঝে যেতে চান? চলে আসুন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৷ প্রকৃতির এক নিবিড় মেল বন্ধন এই বিশ্ববিদ্যালয়টি৷এর ঠিক পাশ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ দিকের গেট পার হলে ভোলা-বরিশাল মহাসড়ক। এখানের অপরূপ সৌন্দর্যের ছোঁয়ায় মন কাড়ছে সবার ৷ তাই সকলের কাছে এটি ‘ভোলা রোড’ হিসাবে পরিচিত ৷

নির্মল বাতাস। পিচঢালা পরিষ্কার রাস্তা। সুবিশাল গগনশিরীষ গাছ রাস্তার দুই ধারে। সড়কের দুই ধারে বেড়ে উঠা গাছগুলো যেন একে অপরকে আলিঙ্গন করতে মরিয়া। গাছগুলোকে রৌদ্রস্নান করাতে সূর্যমামার কত প্রচেষ্টা। সূর্যের আলো কখনো গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে রাস্তায় নেমে আসছে, কখনো বা পাতায় আটকে যাচ্ছে। এমনই আলো-ছায়ার খেলায় সৌন্দর্যের প্রতিমা হয়ে জেগে আছে একটি রাস্তা। বলছিলাম সৌন্দর্যমণ্ডিত ভোলা রোডের কথা।

সড়কজুড়ে রয়েছে শত শত গাছের সারি। সবুজে ঘেরা এ মহাসড়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে। পাশেই রয়েছে নদী। তার তীর ঘেঁষে একেঁবেকেঁ চলে গেছে এ ভোলা বরিশাল মাহাসড়কটি।

শহরের যান্ত্রিক কোলাহলের মধ্যে একটু প্রশান্তি পেতে হেটে যায় অনেকেই। বিশ্ববিদ্যালয়টির দক্ষিণ দিকের গেট পার হলেই ভোলা-বরিশাল মহাসড়কে চোখ পড়বে প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তা। এটি গিয়ে মিশেছে ভেদুরিয়া ফেরিঘাটে, সমগ্র রাস্তাজুড়ে এক সবুজের হাতছানি। মসৃণ পিচঢালা পথের দুপাশে সারি সারি গাছ। ওপরে একে অপরের সঙ্গে মাথা ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ছাতার মতো।

মহাসড়কটিতে হাঁটতে হাঁটতে কানে ভেসে আসবে পাখির কিচির মিচির শব্দ। মনে হবে গ্রাম বাংলার কোনো এক মেঠোপথ দিয়ে হাঁটছি। দুপাশে সবুজের সমারোহ সৌন্দর্যের এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যানজট কোলাহলমুক্ত এ সড়কে শিক্ষার্থীরা মাঝে মাঝেই তাদের অবসাদ ও ক্লান্তি দূর করতে আসেন। কেউ কেউ আবার বিকালে হাঁটেন মহাসড়কের সবুজবৃক্ষের পাতার ছায়ায়।

হটাৎ রাতে যদি ঘুম উধাও হয় চোখ থেকে, কিংবা বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় গরমে জীবন যায় যায় অবস্থা, সেই মুহূর্তে অনেকের মনে পড়ে ভোলা রোডের শীতল হাওয়ার আত্মাটাকে একটু জুড়িয়ে নেয়ার কথা।

২০১৭ সালে বরিশাল-ভোলা সড়কে ফুলের সরণি বিনির্মাণের লক্ষ্যে প্রায় তিন হাজার ফুলের গাছ রোপন করা হয়। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বরিশাল-ভোলা সড়কের হিরণ পয়েন্ট থেকে চরকাউয়া পয়েন্ট পর্যন্ত ৪-৮ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে তিন ধরনের ফুলের বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি পালিত হয়।

বরিশালের তৎকালীন ডিসি ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামানেরর নেতৃত্বে ৪.৮ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে কৃষ্ণচূড়া, সোনালু ও জারুল বৃক্ষরোপণ করা হয়। তিন ধরনের বৃক্ষরোপণের মধ্যে দিয়ে সড়কটিকে রঙিন ফুলে আচ্ছাদিত করার লক্ষ্যেই এ অভিযান বলে জানান ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান।

সেসময় বরিশাল জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ফুল সরণি বিনির্মাণে ফুলের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নেয় বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রায় আড়াই হাজার মানুষ। পাশাপাশি অংশ নেয় ৯৬টি এনজিও সংস্থা, সিটি কর্পোরেশন ও বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ৷

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহানা আফসার মৌরী বলেন, ক্যাম্পাসের বাইরের এই রোডটি এতই সুন্দর যে, সারাদিনের ক্লান্তি শেষে ওই রাস্তায় একটু হাঁটলেই সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। আর সাথে যদি থাকে প্রিয় মানুষের হাত,তাহলে তো আর কথাই নেই!

হ্যাঁ, ভোলা রোড যেমন জনসাধারণের চলার রাস্তা,ঠিক তেমনই ববিয়ানসহ সকল প্রেমিক-প্রেমিকাদের সুন্দর মুহুর্ত কাটানোর জন্য একটি প্রিয় জায়গা। সারাদিন ক্লাস, টিউশনি করার পর বিকেল বেলা অনেক ভাইয়া আপুদেরই দেখা যায় ক্লান্তি দূর করার জন্য কিংবা নিজেদের মতো করে সময় কাটানোর জন্য।

মহাসড়কটি শ্রমজীবী মানুষের আয়ের উৎস হিসেবে কাজ করছে, এখানে রয়েছে অসংখ্য টংয়ের চায়ের দোকান। এ সড়কের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে উপভোগ করতে আসা দর্শনার্থী ও পথযাত্রীরা নিজেদের ক্লান্তি দূর করতে চায়ের আড্ডায় বসেন।

ঢাকা, ০২ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ