ববি লাইভঃ যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও মহান শহীদ দিবস ২০২০ পালিত হয়েছে। শুক্রবার (২১শে ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯ টায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ ছাদেকুল আরেফিনের নেতৃত্বে একটি র্যালী বের হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে ঢাকা -পটুয়াখালি মহাসড়ক,ভোলা রোড, টিএসসি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়।
এর পর প্রথমে উপাচার্য শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি,বঙ্গবন্ধু পরিষদ, সেক্টরকমান্ডার’স ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ একাত্তর,বরিশাল বিশ্ববিদ্যাল অফিসার্স এসোসিয়েশন, বঙ্গবন্ধু হল,শেরে বাংলা হল,শেখ হাসিনা হল,গ্রেড ১১-১৬ কল্যাণ পরিষদ, গ্রেড ১৭-২০ কল্যান পরিষদ এর সদস্যগণ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় এর ২৪ টি বিভাগের চেয়ারম্যান এর নেতৃত্বে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করেন।
শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ শেষে ভাষা শহীদদের স্মরণে শিক্ষক সমিতির আয়োজনে কীর্তনখোলা হলে সকাল সাড়ে ১০ টায় আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো খোরশেদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ আরিফ হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ ছাদেকুল আরেফিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো ইউসুফ কালু ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো মুহসিন উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ইউসুফ কালু বলেন, তৎকালীন সময়ে বরিশালের এসপি ছিলেন বিহারী এবং ডিসি ছিলেন পাঞ্জাবি। তিনি বিহার থেকে রিফিউজিদের বরিশালে নিয়ে আসেন।এবং বরিশালের কাশিপুর,বাংলাবাজার, বাজার রোড বিভিন্ন পরিত্যক্ত জায়গায় তাদেরকে সেটেল করেন।
আপনারা ৭০ বছর আগের কার সেই সামাজিক অবস্থা অনুধাবন করতে পারবেন না।সাম্প্রদায়িকতা স্তরে স্তরে আমাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছে।আমরা আরও অনেক উপরে যেতে পারতাম কিন্তু সাম্প্রদায়িকতার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি।মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় আলিয়া,কওমি দুইটা স্তর আবার জেনারেল শিক্ষা ব্যস্থায় বাংলা,ইংরেজি দুইটা স্তর। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ঢালাও করে একই স্তরে আনা উচিত।
উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ ছাদেকুল আরেফিন বলেন, বাঙালি জাতিসত্তার উন্মেষ ঘটানোর জন্য ভাষা আন্দোলনের ভূমিকা ছিল অনন্য। মূলত ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি,বাংলাদেশের চেতনার উন্মেষ ঘটেছিল। বাঙালি সংঘটিত হয়েছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। এবং আজকের যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে বলা যায় এটি একটি তারই প্রতিফলন। আজকের দিনে তরুণ প্রজন্মের কাছে এটুকু আহ্বান থাকবে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সাংবিধানিক বলা হয়েছে রাষ্ট্রীয় ভাষা হবে বাংলা ভাষা এবং সেটির সর্বস্তরে যথাযথভাবে প্রচলন করতে হবে।বাংলা ভাষা প্রচলনের মধ্য দিয়ে আমাদের বাঙালি জাতি বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য তরুণ প্রজন্মকে বলব শুদ্ধভাবে বাংলা ভাষার চর্চা করে বাঙালি জাতি পৃথিবীর বুকে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টায় অবতীর্ণ হবে।
ঢাকা, ২১ ফেব্রুয়ারি (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: