Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

২০ মিনিটে গুচ্ছের স্বপ্নভঙ্গ মেহেরুনের, জবি ভিসির দুঃখ প্রকাশ

প্রকাশিত: ২১ মে ২০২৩, ০১:৩৯

মেহেরুন নেসা

জবি লাইভ: ঘড়ির কাটায় সময় তখন প্রায় ১২ টা বেজে ২০ মিনিট। সাভার থেকে পরীক্ষা দিতে আসা মেহেরুন নেসা দায়িত্বরত এক স্বেচ্ছাসেবকের সাথে দৌড়াতে থাকে ভাষাশহীদ রফিক ভবনের দিকে। দেরিতে আসায় দায়িত্বরত শিক্ষকরা একবার প্রশ্ন ও উত্তরপত্র দিয়ে পরবর্তীতে আবারও ফেরত নিয়ে পরীক্ষা কক্ষ থেকে বের করে দেন। বের হয়ে এসে শান্ত চত্বরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মেহেরুন নেসা নামের এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী।

জানা যায়, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা দিতে সাভার থেকে বাসে করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে এসেছে মেহেরুন নেসা। গুলিস্তান থেকে ভিক্টোরিয়া পার্ক রাস্তায় তীব্র জ্যামে আটকা পড়ে মেহেরুন ও তার বোন। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার প্রথম দিনে দুপুর ১২ টায় পরীক্ষা শুরু হলেও যানজটের কারণে পরীক্ষাকেন্দ্রে মেহেরুন প্রবেশ করে প্রায় ১২ টা ২০ মিনিটে। এক স্বেচ্ছাসেবক তাকে ভাষাশহীদ রফিক ভবনের ৪র্থ তলার ইতিহাস বিভাগে নিয়ে যায়। ২০ মিনিট দেরিতে আসায় পরীক্ষা রুমে দায়িত্বরত শিক্ষক বলে ওএমআর শিট নাই। এখন আর পরীক্ষা নেয়া যাবে না। এরপর তাকে চেয়ারম্যানের অনুমতি নিতে বলেন। চেয়ারম্যানের কাছে অনুমতি নিয়ে আসার পরে দেখা যায় মেহেরুনের আসন তৃতীয় তলায় না, চতুর্থ তলায়। পরবর্তীতে মেহেরুনকে চতুর্থ তলায় নিয়ে যেতে যেতে ১২ টা ৪০ বেজে যায়। চতুর্থ তলার ৪০১ নাম্বার রুমে গেলে সেই রুমের দায়িত্বরত শিক্ষক মেহেরুনকে পরীক্ষা দিতে না দিয়ে বের করে দেয়।

মেহেরুন নেসা বলেন, যানজটের কারণে আমি ২০ মিনিট দেরি করে পরীক্ষা দিতে আসি, পরে এক স্বেচ্ছাসেবী আপু আমাকে রফিক ভবনের তৃতীয় তলায় নিয়ে যায়। পরে আমাকে একজন স্যার বলেন, ওএমআর শিট নাই, পরীক্ষা দেওয়া যাবে না। এভাবে হয়রানির মাধ্যমে আরও কিছুটা সময় ক্ষেপণ করে। পরবর্তীতে স্যার বলেন চেয়ারম্যানের অনুমতি নিতে হবে। চেয়ারম্যানের অনুমতি নিতে নিতে ১২ টা ৪০ বেজে যায়। অনুমতি নিয়ে আমাকে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হলেও পরবর্তীতে সেটি আমার নির্ধারিত কক্ষ নয় এমন কারণ দেখিয়ে তা প্রত্যাহার করা হয়। পরবর্তীতে আমার নির্দিষ্ট কক্ষে(৪০১) উপস্থিত হলেও আমাকে পরীক্ষার দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় নি।

কান্নারত অবস্থায় মেহেরুন সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে যখন পরীক্ষা দিতে দিবে না তাহলে আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটেই আটকাতো। কেন আমাকে ভিতরে আসতে দিয়ে একজন শিক্ষকের কাছে হেনস্তার শিকার হতে হলো?

তিনি আরও জানান, আমার মতো অনেকেই দেরিতে এসেও অন্যান্য রুমে পরীক্ষা দিতে পেরেছে। শুধুমাত্র আমাকেই কেন পরীক্ষা দিতে দিলো না। মানবিক দিক বিবেচনা করে অন্যদের পরীক্ষা দিতে দিলো কিন্তু আমাকে দিলো না কেনো?

এ বিষয়ে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক রইছ উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীর উচিত ছিল আমাদের কাছে রিপোর্ট করা। যেহেতু পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে এখন আর কিছু করার নেই।

এখানে দায়িত্বরত শিক্ষকদের দায়িত্ব কোনো অবহেলা দেখছেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্বের কোনো অবহেলা ছিল না। পরীক্ষাকক্ষের দায়িত্বরত শিক্ষক আমাদের শুরুতেই জানালে কিছু করা যেত।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের মানবিক দিক বিবেচনা করে ২০-৩০ মিনিট দেরি করে আসলেও পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিয়েছি। তবে এটা মানবিক দিক বিবেচনা করেই। পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্বরত শিক্ষকরাই এটি দেখবে। আজকে উপকেন্দ্র নটরডেম কলেজের একজন পরীক্ষার্থী ভুল করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলে এসেছে আমি জানার পর তারও পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আমাকে যদি আগে বিষয়টি জানানো হতো তাহলে কোনো কিছু করা যেতো। যেহেতু আমাকে পরে জানানো হয়েছে সেহেতু এখন আর দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া কিছু করার নাই।

শিক্ষকের হেনস্তার বিষয়ে জানতে চাইলে জবি উপাচার্য বলেন, আমাকে যদি লিখিত অভিযোগ দিয়ে যায় অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরবর্তীতে মেহেরুন নেসা উপাচার্য বরাবর পরীক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষকের হয়রানির প্রতিকার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

ঢাকা, ২০ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//আরআই//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ