Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ১৬ই মে ২০২৪, ২রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

রাবিতে মুখ ব্যান্ডেজ করে প্রক্সি: প্রভাষক সমের এখন জেলে

প্রকাশিত: ২৮ জুলাই ২০২২, ০১:১৭

প্রভাষক সমের এখন জেলে

উমর ফারুক, রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) চলছে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় অন্যের হয়ে পরীক্ষা দেওয়ার অপরাধে ‘প্রক্সিদানকারী প্রভাষক ডা. সমের রায়কে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

এরআগে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) পরীক্ষার জন্য নিয়োজিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার কৌশিক আহমেদ এ দন্ড প্রদান করেন। পরে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

প্রক্টরদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাবির ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক হওয়া খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের প্রভাষক ডা. সমের রায় মূলত রোগী সেজেই পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন। তিনি রোল ৮৪৬৪৮-এর পরীক্ষার্থী মোহাম্মদ রাহাত আমীন রিয়াদের পরিবর্তে শেখ রাসেল মডেল স্কুলে পরীক্ষা সম্পন্নও করেছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের বিড়ম্বনায় ধরে পড়ে যান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আরিফুর রহমান জানান, পরীক্ষার মূল প্রার্থী মোহাম্মদ রাহাত আমীন রিয়াদের পরিবর্তে পুরো মাথা এবং মুখ ব্যান্ডেজ করে পরীক্ষার রুমে প্রবেশ করেন ডা. সমের। পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্বরত ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের প্রফেসর জাকির হোসেন ও শেখ রাসেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলামকে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার কথা জানান তিনি।

ডাক্তার সমের পরীক্ষা কক্ষের দায়িত্বরত শিক্ষকদের জানিয়েছিলেন, সকাল বেলায় তিনি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা করেছেন। দুর্ঘটনার পর মাথা ও মুখে ব্যান্ডেজ করে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে তিনি পরীক্ষা দিতে এসেছেন। ডাক্তার সমেরের এই দুর্ঘটনার কথা শুনে পরীক্ষার রুমের দায়িত্বরত দুই শিক্ষক তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করার কথা বলেন এবং অ্যাম্বুলেন্সও ডাকতে চান।

কিন্তু ডাক্তার সমের পরীক্ষা কক্ষের দায়িত্ব শিক্ষকদের জানান, পরীক্ষা শেষে তিনি ট্রিটমেন্ট নেবেন। এরপর সাড়ে তিনটায় ‘এ’ ইউনিটের চতুর্থ শিফটের পরীক্ষা শুরু হয়। মাথা ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় তিনি পরীক্ষা দেন। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর তিনি চলে যাওয়ার জন্য বেশ তাড়াহুড়া করেন।

কিন্তু পরীক্ষা কক্ষে দায়িত্বরত দুই শিক্ষক তাকে একা যেতে দিতে রাজি হননি। দুই শিক্ষক ডাক্তার সমেরের মাথার সিটি স্ক্যানসহ চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন। এজন্য তিনি ডা. সমেরের অভিভাবককে ডাকতে বলেন। এরপরও ডা. সমের একা যেতে চান। কিন্তু শিক্ষকরা তাকে যেতে দেননি।

উপায়ন্তর না পেয়ে ডাক্তার সমের মূল পরীক্ষার্থী মোহাম্মদ রাহাত আমিনকে তার অভিভাবক হিসেবে ডাকেন।

রাহাত আমিন সেখানে উপস্থিত হলে দায়িত্বরত দুই শিক্ষক তাকে চিনে ফেলেন এবং প্রক্টরিয়াল বডিকে খবর দেন। পরে প্রক্টরিয়াল বডি তাদের আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনে নিয়ে যান। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে প্রক্সি দেওয়ার কথা স্বীকার করেন ড. সমের। পরীক্ষার জালিয়াতির দায়ে ডাক্তার সমেরকে এক বছর ও প্রার্থী রাহাতকে এক মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক।

এছাড়াও মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনটি ভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে প্রক্সি দিতে গিয়ে ধরা পড়ে আরো তিন শিক্ষার্থী। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন গ্রুপ-১ এর মো. এখলাসুর রহমান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। এখলাসুর জয়পুরহাটের পাঁচবিবি এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেমের ছেলে। অন্যজন হলেন সজীব আহমেদ। তিনি গ্রুপ-২ এর পরীক্ষার্থী তানভীর আহমেদ নামের একজনের হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। সজীব ঢাকার নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা আব্দুস সালামের ছেলে। তৃতীয় জন পঞ্চগড়ের মো. জয়নাল আবেদীনের মেয়ে জান্নাতুল মেহজাবিন। তিনি মোছা. ইসরাত জাহান নামের একজনের হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।

তারা যথাক্রমে রোল ১৭২২৮ এর পরীক্ষার্থী লিমন, রোল ৩৯৫৩৪ এর পরীক্ষার্থী তানভির আহমেদ ও রোল ৬২৮২৮ এর পরীক্ষার্থী মোসা. ইশরাত জাহানের হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলো। পরে দণ্ডপ্রাপ্তদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা, ২৭ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ