Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বুধবার, ১৫ই মে ২০২৪, ১লা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ডোলমা খাং শিখর জয় করলেন ৪ বাংলাদেশি অভিযাত্রিক

প্রকাশিত: ৫ নভেম্বার ২০২২, ২৩:৪৬

জাতীয় পতাকা হাতে বাংলাদেশের অভিযাত্রীরা

লাইভ প্রতিবেদক: প্রথমবারের মতো হিমালয় পর্বতমালার ডোলমা খাং শিখর জয় করেছেন বাংলাদেশের চার অভিযাত্রিক। বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় গৌরী শঙ্কর হিমালয় রেঞ্জে ২০ হাজার ৭৭৪ ফুট উচ্চতার ঝুঁকিপূর্ণ ডোলমা খাং শিখরে পা রাখেন তাঁরা।

বাংলাদেশি পর্বতারোহীরা হলেন- দু'বারের এভারেস্ট বিজয়ী এম এ মুহিত, কাজী বাহালুল মজনু বিপ্লব, ইকরামুল হাসান শাকিল ও রিয়াসাদ সানভী। এই দুঃসাহসিক অভিযানে তাঁদের সঙ্গে নেপাল দলে ছিলেন কিলু পেম্বা শেরপা ও নিমা নুরু শেরপা।

বাংলাদেশ ও নেপালের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে ছয় পর্বতারোহী ডোলমা খাং অভিযানে যান। শেষ পর্যন্ত নতুন চূড়া জয় করতে পেরে আনন্দে ভাসছেন অভিযাত্রীরা। এম এ মুহিত বলেন, প্রথম বাংলাদেশি দল হিসেবে অভিযান এবং ডোলমা খাং আরোহণের সাফল্যে আমরা আনন্দিত।

যদিও দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীতে এ অভিযানের লক্ষ্য ছিল 'দোগারি হিমাল' শৃঙ্গে দু'দেশের পতাকা ওড়ানো। সাড়ে ২২ হাজার ফুট উঁচু এই শৃঙ্গ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে অক্টোবরের মাঝামাঝি কাঠমান্ডু থেকে যাত্রা করেন দু'দেশের আট অভিযাত্রী। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে পথ খুঁজে না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন।

এ বিষয়ে দলনেতা এম এ মুহিত জানান, ১২ অক্টোবর পশ্চিম নেপালের রুকুম জেলার কাংড়ির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন তাঁরা। জিপে তাকসারায় যান। এরপর শুরু হয় দোগারি হিমাল বেসক্যাম্পের উদ্দেশে ট্র্যাকিং। দোগারি হিমালে আগে কখনও অভিযান হয়নি বলে বেসক্যাম্পের পথ চেনার জন্য মাইকোট গ্রাম থেকে ভক্ত পুন মাগার নামে এক গাইড নেন। ডোলে ও ফেদি নামের জায়গা পার হয়ে ১৫ হাজার ৯২ ফুট উঁচুতে নিমকুন্ড ফুলগাড়ি উপত্যকায় ক্যাম্প করেন তাঁরা।

তিনি আরও জানান, সাধারণত এ ধরনের জায়গা এ সময়ে ঘাসে আবৃত থাকে। কিন্তু সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে অক্টোবরের শুরু পর্যন্ত নেপাল হিমালয়ে ভারি তুষারপাতের কারণে ৩-৪ ফুট উঁচু বরফ জমে ছিল। দু'দিন সেখানে অবস্থান করে বেসক্যাম্পের সন্ধানে আরও ওপরে যাওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা।

কিন্তু ৫ হাজার মিটারের কাছাকাছি পৌঁছে ৭-৮ ফুট উঁচু বরফের কারণে সামনে যাওয়া অসম্ভব হয়ে ওঠে। এরই মধ্যে আবার তুষারপাত শুরু হলে নেপাল দলের নেতা কিলু পেম্বা শেরপার সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করে দোগারি হিমাল অভিযান পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ২৪ অক্টোবর কাঠমান্ডু ফিরে আসেন পর্বতারোহীরা। তবে হাল না ছেড়ে আয়োজক ইমাজিন নেপালের সঙ্গে আলোচনা শেষে অভিযানটি ডোলমা খাং শিখরে করা হয়ে বলে জানান মুহিত।

প্রসঙ্গত, ২৮ অক্টোবর সিমিগাওয়ের উদ্দেশে কাঠমান্ডু থেকে যাত্রা শুরু করেন পর্বতারোহীরা। ৩০ অক্টোবর ১২ হাজার ২৭০ ফুট উচ্চতার বেদিং গ্রামের বেসক্যাম্পে পৌঁছান তাঁরা। সেখান থেকে ১ নভেম্বর দুপুরে ১৬ হাজার ৭৬ ফুট উচ্চতায় হাইক্যাম্পে পৌঁছান। এরপর রাত ১টায় শিখর জয়ে চূড়ান্ত ট্র্যাকিং শুরু হয়। প্রথমে পাথরের বোল্ডার পেরিয়ে রাত ৩টার দিকে বরফে মোড়ানো প্রান্তরের কাছে যান। সেখান থেকে ক্র্যাম্পনসহ প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল সরঞ্জামাদি পরে এক দড়িতে নিজেদের বেঁধে যাত্রা করেন তাঁরা। ভোর ৬টার দিকে ৭০ থেকে ৯০ ডিগ্রি খাড়া কয়েকশ মিটার উচ্চতার একটি দেয়ালের নিচে পৌঁছান।

এই কঠিন দেয়ালে রোপ ফিক্স করেন কিলু পেম্বা শেরপা ও নিমা নুরু শেরপা। দড়ি বেয়ে শুরু হয় কষ্টকর জুমার ক্লাইম্বিং। খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কারণ দড়িতে ওপরে যিনি ছিলেন, তাঁর পায়ের চাপে বরফ ও পাথর খসে পড়ছিল, দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিল। কষ্টকর আরোহণ শেষে প্রায় ২৫ মিটারের ভয়ংকর ঝুঁকিপূর্ণ এক সরু রিজ লাইন পেরিয়ে সবাই ডোলমা খাং শিখরে পৌঁছান বলে জানান এম এ মুহিত। অভিযানটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাব ও ইমাজিন নেপাল।

ঢাকা, ০৫ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ